রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোনাম: রোববার ২৮ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে    জেনে নিন হজের প্রথম ফ্লাইট কবে    একটা জাল ভোট পড়লেই সেই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ : ইসি    ফের তিনদিন বা ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করা হতে পারে     রোববার থেকে চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক    বাংলাদেশকে ডেথভ্যালিতে পরিণত করেছে সরকার : রিজভী    বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ইমাম পরিচয়ে ২১ বছর আত্মগোপনে ছিলেন জঙ্গি নেতা শফিকুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৩:৩৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

রমনা বটমূলে বোমা হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি শফিকুর রহমান ওরফে শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুল করিম ইমাম পরিচয়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেফতারের পর এমনটা জানিয়েছে র‌্যাব।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় জড়িত শফিকুল ইসলাম (৬১)।

খন্দকার মঈন বলেন, রমনা বটমূলে হামলার পর ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মুফতি শফিক আত্মগোপনে থেকে সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আব্দুল করিম নাম ধারণ করে ২০০৮ থেকে নরসিংদীর একটি মাদরাসায় আত্মগোপন করেন তিনি। নরসিংদীর চর এলাকায় অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকুরি নেন শফিক। ইমামতির আড়ালে তিনি মানুষের মাঝে ধর্মের নামে বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা প্রচার করতেন। কৌশলে মাঝে মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর সব মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছে র‌্যাব। এরই মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পলাতক আসামি জঙ্গি ইকবালকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত বোমা হামলায় ১০ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ অপর একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন আটজনকে মৃত্যুদন্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি বিজ্ঞ দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-১ এ বিচারাধীন রয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে একটি জনসভা চলাকালে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা হয়। ওই গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও প্রায় তিন শতাধিক গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় একটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার সহযোগিতাসহ দুটি পৃথক মামলা হয়।

দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মুফতি শফিকুর রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। গ্রেফতার শফিকুর রহমান ওই গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। একই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা অপর মামলারও পলাতক আসামি ছিলেন তিনি।

এছাড়াও ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর থানার বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত এবং কমপক্ষে শতাধিক লোক আহত হয়। ওই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শফিকুর কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। শফিকুরের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মোট ছয়টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।



গ্রেফতার শফিকুর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের নিজ গ্রামে ৫ম শ্রেণী পাস করার পর মাদরাসায় পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা চকবাজারের একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করেন তিনি।

১৯৮৩ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় ভর্তি হয়ে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত দাওরায়ে হাদিস (টাইটেল) পাস করে বাংলাদেশে ফেরত আসেন তিনি। এরপর ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের করাচিতে ইউসুফ বিন নুরী মাদরাসায় ফতোয়া বিভাগে ভর্তি হয়ে তিন বছরের ইফতা (ফতোয়া) কোর্স সম্পন্ন করেন শফিক। করাচির নিউ টাউনে পড়াশোনা করার সময় মুফতি হান্নানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার।

১৯৮৯ সালে পাকিস্তানে অবস্থানকালীন মুফতি শফিক আফগানিস্তানে চলে যান এবং তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করেন। সেখানে থাকাকালীন জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। এরপর ১৯৮৯ সালের শেষের দিকে তিনি আবার বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বাংলাদেশে আসার পর তিনি ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মাদরাসায় পার্ট টাইম শিক্ষকতা শুরু করেন শফিকুর।

আফগানিস্তান থেকে দেশে এসে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলার চিন্তা করেন মুফতি শফিক। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে দেশে ফেরত এসে সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে হুজিবি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি হুজিবির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত হুজিবির আমীর ও ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত হুজিবির সুরা সদস্য ছিলেন তিনি।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]