বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিরোনাম: শুক্রবার নাগাদ আসতে পারে ভারতের পেঁয়াজ    বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের    বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা    একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন    ময়মনসিংহে বাসচাপায় অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত    বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, তৃতীয় ঢাকা    কাতারের আমির ঢাকায় আসছেন এপ্রিলে   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
যেসব সম্পদের ওপর জাকাত নেই
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৪:০৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

জাকাত ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে একটি। জাকাত আরবী শব্দ। এর মূল ধাতু হচ্ছে যাকয়ুন। এর চারটি অর্থ রয়েছে। যেমন- ১. পবিত্রতা ২.বৃদ্ধি পাওয়া ৩. প্রশংসা ৪. প্রাচুর্যতা। শরিয়তের পরিভাষায় জাকাত বলা হয়- সম্পদশালীদের উপর আল্লাাহর নির্ধারিত সেই অংশ যা আদায় করা ওয়াজিব।

জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি পায়, পবিত্র হয় এবং অন্য দিকে দারিদ্র্য সমস্যা দূর করে। দ্বিতীয় হিজরীতে জাকাত ফরজ হয় এবং নবম হিজরীতে জাকাত ইসলামী রাষ্ট্রের রাজস্বকর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
 
চার প্রকার সম্পদের উপর জাকাত ফরজ। যেমন- ১. স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ, ২. বাণিজ্যিক পণ্য, ৩. মাঠে বিচরণকারী গবাদি পশু, ৪. জমিতে উৎপাদিত শস্য ও ফলমূল।

কাদের ওপর জাকাত ফরজ

প্রত্যেক ধনবান ব্যক্তি বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির উপর জাকাত ফরজ। সাড়ে সাত তোলা (৮৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৫৯৫ গ্রাম) রূপা অথবা তার সমমূল্যের সম্পদকে নেসাব বলা হয়।

এই পরিমাণ সম্পদ যখন কোন ব্যক্তির জীবন ধারনের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণাদির অতিরিক্ত হবে এবং পূর্ণ এক বছর সে ঐ সম্পদের মালিক থাকবে, তখন তার উপর জাকাত ফরজ হবে। স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ ও ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের বছরান্তে ৪০ ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ২.৫% জাকাত বাবত আদায় করতে হবে।

সোনার নেসাব অনুযায়ী সোনার জাকাত এবং রূপার নেসাব অনুযায়ী রূপার জাকাত আদায় করতে হবে। নগদ টাকা এবং ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত রূপার নেসাবের হিসাবে আদায় করতে হবে। অর্থাৎ নগদ টাকা বা ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত আদায় করার সময় সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যকে পরিমাণ ধার্য করতে হবে।

গৃহপালিত পশুর জাকাত

গৃহপালিত পশু ও নির্দিষ্ট সংখ্যায় পৌছলে জাকাত দিতে হয়। চারণভুমিতে বিচরণশীল ৩০টি গরু অথবা মহিষের জন্য ১ বছর বয়সের ১টি গরু অথবা মহিষের বাচ্চা জাকাত দিতে হবে। অনুরূপ ৪০ থেকে ১২০টি ছাগলের জন্য বছরে ১টি ছাগল জাকাত দিতে হবে।

৩০ টির কমে গরু অথবা মহিষে এবং ৪০টির কমে ছাগলে জাকাত নেই। তবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে যদি ক্রয় করে রাখা হয় তাহলে ব্যবসায় পণ্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে এগুলোর মূল্যের উপর জাকাত আসবে।

উশর তথা উৎপাদিত শস্য ও ফল মূলের জাকাত

উশর তথা ফল ফসলের জাকাত আমাদের দেশে খুব কমই আদায় করা হয় এবং এর আলোচনা ও কম হয়। যার দরুন এ সম্পর্কে অনেকে জানেইনা যে, উৎপাদিত ফসলেরও জাকাত আদায় করতে হয়।

উশর এর অর্থ হলো এক দশমাংশ। জমি থেকে উৎপন্ন সকল প্রকার শস্য, শাকশব্জি ও ফলের এক দশমাংশ জাকাত বাবত আদায় করাকে উশর বলে। সকল প্রকার শস্য, শাকশব্জি ও ফলের উপর জাকাত প্রযোজ্য। কারো কারো মতে কেবল গোলাজাত শস্য বা ফসল ছাড়া অন্য ফষলের উপর জাকাত নেই। জমির ফসল আহরণের সঙ্গে সঙ্গে উশর পরিশোধ করতে হয়। এক্ষেত্রে বৎসর অতিক্রান্ত হওয়া প্রয়োজন নেই। বৎসরে একাধিকবার ফসল আসলে একাধিক বার উশর আদায় করতে হবে।

শস্য ও ফলমূলের নেসাব

যেসব জমিতে সেচ প্রয়োজন হয় না, অর্থাৎ ফসল উৎপাদনের জন্য পানি সি ন করতে হয় না বরং প্রাকৃতিকভাবে নদী বা বৃষ্টির পানি দ্বারাই ফসল ফলানো হয়, এরকম জমি থেকে আহরিত ফসলের দশ ভাগের একভাগ আর যে জমিতে সেচের প্রয়োজন হয়, অর্থাৎ পানি সি ন করে ফসল উৎপাদন করতে হয় এরমক জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ জাকাত বাবত আদায় করতে হবে।



বিশ ভাগের এক ভাগকে বলা হয় নিসফে উশর। অবশ্য এ থেকে চাষ, কর্তন, মাড়াই ইত্যাদির খরচ বাদ যাবে। ফসলের নেসাবের পরিমাণ হলো ৫ ওয়াসাক। অর্থাৎ কেউ যদি ৫ ওয়াসাক তথা আনুমানিক ২৫ মন শস্য পায় তাহলে সে উশর বা নিসফে উশর আদায় করতে হবে। তবে ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.) এর মতে, ৫ ওয়াসক হওয়া জরুরী নয় বরং ফসল পৌণে দুই সেরের বেশি হলেই উশর আদায় করতে হবে। (দুররুল মুখতার, ২য় খন্ড)

যেসব সম্পদের ওপর জাকাত নেই

অত্যাবশ্যকীয় সম্পদ বা উপকরণ হলো- বসবাস, ব্যবহার ও উৎপাদনের কাজে বা ভাড়ায় নিয়োজিত ঘর, বাড়ি, দোকান কোঠা, স্থায়ী সম্পত্তি, দালান কোঠা, পেশাগত সামগ্রী, কারখানার যন্ত্রপাতি, যোগাযোগের বাহন ইত্যাদির উপর জাকাত আসেনা। তবে এসব থেকে ভাড়া বাবত অর্জিত আয় অন্য জাকাত যোগ্য সম্পদের সাথে যুক্ত করে ২.৫% হারে জাকাত আদায় করতে হবে।

ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করে রাখা জমি, দালান ও দোকান ঘর, অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি, যন্ত্রপাতি উত্যাদির মূল্যের উপর জাকাত ধার্য হবে। ঘরের আসবাব পত্র, তৈজসপত্র, খাদ্যদ্রব্য, পোশাক পরিচ্ছদ, নিজের ও নিজের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল আত্মীয় স্বজনদের দৈনন্দিন খরচের উপর জাকাত আসে না।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]