দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় এমপিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নানা সমীকরণে এমপি মনোনয়ন দেওয়া হয়। তারা দলের মনোনয়নে এমপি হন। এমপি হয়েই দলকে তার ইচ্ছামতো পরিচালনায় মরিয়া হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। এটা চলবে না। দল চলবে নিজস্ব গতিতে। নিজস্ব বলয় ভারী করতে দলের ভিতরে উপদল তৈরি করবেন না।
সভায় আট সাংগঠনিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এলাকার জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যন্ত সাংগঠনিক অবস্থার চিত্র উত্থাপন করেন। সাত বিভাগের সাত সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দেশে না থাকায় তার পরিবর্তে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ সভায় ওই বিভাগের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
এসব প্রতিবেদনে ২৫ জেলায় এমপিদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের দূরত্ব, কোন্দল ও উপদল গঠন করার প্রসঙ্গ উঠে আসে। জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নানা সমীকরণে এমপি মনোনয়ন দেওয়া হয়। তারা দলের মনোনয়নে এমপি হন। অনেক এমপি নিয়মের বাইরে চলে যায়। কেউ কেউ দলকে তার ইচ্ছেমতো পরিচালনায় মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেকে তৃণমূলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে দেন। আবার সব কর্তৃত্ব নিতে কেউ কেউ উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান।
শেখ হাসিনা বলেন, এমপিরা এমপিত্ব করবে, দলও করবে। কিন্তু খবরদারি করবে না। জেতার জন্য অনেককেই মনোনয়ন দেওয়া হয়। তার অর্থ এই নয় যে, তারাও দলে খবরদারি করবেন। দল চলবে দলের গতিতে। দলের ভেতরে গ্রুপিং বা উপদল তৈরি করা যাবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দলকে শক্তিশালী করতে হবে। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
সভায় বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ায় পাবনার একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করা ২০ জন নেতাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বৈঠকে থাকা এক নেতা জানান, যারা অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বা দলের প্রার্থীদের বিপক্ষে কাজ করেছেন, তাদের দল থেকে একেবারে বহিষ্কার না করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেমন ভবিষ্যতে তাকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়া বা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না রাখা ইত্যাদি।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক বসে যেখানে যেখানে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল আছে তা দ্রুত নিরসনের জন্য সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়। বলা হয়, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। এখনই দেশি-বিদেশি নানা সংস্থা মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ দলীয় নেতাকর্মীদের দিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদকে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় সভায়।