প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:৫৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অন্যতম অর্থনৈতিক খাত পোশাক শিল্প অনবদ্য সাফল্য ধরে রেখেছে। করোনার মধ্যেও আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে লকডাউনে পোশাক শিল্প চালু ছিল। করোনা প্রাদুর্ভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশ ফিরে আসতে শুরু করেছে। বাড়ছে রফতানি। করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা প্রাথমিকভাবে কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। আগের স্থগিত হওয়া রফতানি আদেশ কিছু ফিরে আসছে। ফলে রফতানিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পোশাক শিল্প।
সংশ্লিষ্ট্ররা জানান, নতুন অর্থ বছরের শুরু থেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে রফতানি খাত তৈরি পোশাকের রফতানি ভাটা পড়েছিল। কিন্তু সরকারও পোশাক খাত পুনরুজ্জীবিত করতে আর্থিক ও নীতিগত সুয়োগ-সুবিধা দিয়েছে। আশার দিক হলো, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে পোশাক শিল্প খাত। শীতকালীন রফতানি অর্ডার কী পরিমাণ পাবে, তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের আগামী সম্ভাবনা। যে জন্য অপেক্ষা করতে হবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত। তারপরই বোঝা যাবে কোন অবস্থায় পৌঁছাবে দেশের পোশাক শিল্প।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, বিশ্ববাজারে চলতি বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ২৭৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮ হাজার টাকার। যা ২০২০ সালের আগস্ট মাসের চেয়ে ২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার টাকা বেশি। অর্থাৎ শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্য মতে, চলতি বছরের ওভেন ও নিটওয়্যার খাতের পোশাক রফতানি হয়েছে ২৭৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮ হাজার টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ ২ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার টাকা বেড়েছে। যা শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দু’প্রকার তৈরি পোশাকের মধ্যে ওভেন খাতের আগস্ট মাসে পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১১৫ কোটি ২৯ লাখ ৪ হাজার টাকা। আর নিটওয়্যার খাতের রফতানি আয় হয়েছে ১৬০ কোটি ৪ লাখ ৪ হাজার। এর আগের বছর আগস্ট মাসে ওভেন খান থেকে রফতানি আয় হয়েছিল ১১০ কোটি ৩৫ লাখ ২ হাজার টাকা। আর নিটওয়্যার খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৩৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের সবচেয়ে সফল উদ্যোক্তাদের একজন ফজলুল হক বলেন, করোনা না থাকলে আমরা আরো ভালো করতাম। তবে ডিসেম্বরে মধ্যে পোশাক শিল্পে রফতানি আরো বাড়বে। মাঝখানে রফতানিতে ভিয়েতনাম পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয় ছিল। তবে এখন আমরা আবার পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয়তে চলে আসছি। গত বছরের আগস্ট মাসের চেয়ে পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। আমরা আশা করছি, পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি ধারা অব্যাহত থাকবে। এদিকে ইপিবির তথ্যে দেখা গেছে, গত আগস্টের চেয়ে চলতি বছরের আগস্টে রফতানি বাড়লেও জুলাইয়ে তুলনায় আগস্টে রফতানি আয় কমেছে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার টাকা। জুলাই মাসে ওভেন ও নিটওয়্যার খাতের পোশাক রফতানি আয় হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৭২ লাখ ২ হাজার টাকার। শুধু তাই নয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্ট মাসে মোট রফতানি আয় হয়েছে ৫৬৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর আগের (২০২০-২১)অর্থবছরের দুই মাসে রফতানি আয় হয়েছিল ৫৭১ কোটি ২৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরে সাড়ে ৬ কোটি টাকা কমেছে। যা শতাংশের হিসাবে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ কম।