প্রকাশ: রোববার, ১৯ মে, ২০২৪, ২:০৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আপন ভগ্নিপতি মো. জাফর উল্লাহকে জেতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ভোলা -২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল। দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে সাধারণ ভোটারদের হুমকি, অবৈধ টাকা দিয়ে ভোট কেনার মতো ঘটনাও ইতিমধ্যেই ঘটেছে। এমনকি এমপি আলী আজম মুকুলের নাম ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার পর লিখিতভাবে অভিযোগ জানালে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন এমপির ঘনিষ্ঠ সহচর ও সাচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মহিবুল্যাহ মৃধা। টাকা দিয়ে ভোট কেনার ভিডিও ফুটেজও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর মহিবুল্যাহ মৃধা এই মুচলেকা দেন।
এদিকে, বোবরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থীদের সমর্থকদের প্রকাশ্যেই হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমপি মুকুলের পছন্দের প্রার্থী এবং তার আপন ভগ্নিপতি মো. জাফর উল্লাহকে যেকোনো মূল্যে জেতাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশও দিয়েছেন এমপি। এমনটাই কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রার্থী দেয়নি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি- মন্ত্রীদের স্বজনদেরও নির্বাচন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোলা ২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল নিজের ভগ্নিপতিকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা তো দূরের কথা, তাকে নির্বাচনে যেকোনো জেতাতে প্রভাব বিস্তার করছেন বলেও অভিযোগ এসেছে।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মো. জাফর উল্লাহ বাদে আরো দুজন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে মো. রাসেল ও আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা দাবি করছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে মো. জাফর উল্লাহর জামানত থাকবে না। কিন্তু এমপির ক্ষমতাবলে তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে মরিয়া আচরণ করছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেন বোরহান উদ্দিন উপজেলার সাধারণ ভোটাররা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ভোরের পাতাকে বলেন, আপনারা ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচন ইতিমধ্যেই দেখেছেন। ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পেরেছেন। যেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাব ছিল বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছিল, সেখানে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছিল। তাই তেমন কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেও তেমনটাই হবে। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় যদি স্থানীয় এমপি বা তার লোকজন নির্বাচনে কোনো প্রভাব বিস্তারের বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেখানে অবশ্যই অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। ভোটাররা নিশ্চিতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব।
এসব বিষয়ে ভোলা ২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি তার প্রতিউত্তর করেননি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বেসামরিক বিমান চলাচল, পর্যটন মন্ত্রী লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে কোনো এমপি মন্ত্রীর কোনো স্বজনই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা। সেখানে কোনো এমপি প্রভাব বিস্তার করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের আত্নীয়ও পরাজিত হয়েছে। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও বিশ্বাস করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।