প্রকাশ: সোমবার, ৬ মে, ২০২৪, ১১:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। ১০ এপ্রিল (রোজার ঈদের আগের দিন) ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা বাজারে এই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। এতে জড়িতরা হলেন_ আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাউসার হোসেন টিটো ও আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হান আজিজ খান। এই ঘটনার পর ২ মে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন রফিকুল ইসলাম নামে একজন ছাত্রলীগ কর্মী। এতে তিনি__ চাঁদাবাজির বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে ওই দুই নেতা আলফাডাঙ্গার কোন কোন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা নিয়েছেন সেটা স্বতন্ত্র ভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় অভিযোগটি আমলে নিয়েছে। লিখিত অভিযোগে রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমি (রফিকুল ইসলাম) আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন রাজপথে লড়াই, সংগ্রাম, মিটিং, মিছিল করে আসছি। বর্তমান আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাউসার হোসেন টিটো (মাদক ব্যবসায়ী), আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হান আজিজ খান ও তার অনুসারীরা বর্তমান ফরিদপুর-১ আসনের এমপি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাতে (১০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটার পরে) আলফাডাঙ্গা বাজারে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের (বিশেষ করে ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলো, বড় খাবারের দোকানগুলো ও কাপড় ব্যবসায়ী) কাছে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে। এসময় তারা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় এবং চাঁদা বিষয়টি প্রকাশ করলে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ করে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।' চিঠিতে এই ছাত্রলীগ কর্মী আবেদন জানান, আলফাডাঙ্গার দীর্ঘদিনের শান্তি শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নামধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরজমিনে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাউসার হোসেন টিটো বলেন, এমন অভিযোগের সত্যতা নেই। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে আমি চাঁদাবাজি করেছি তাহলে দলীয় পদ ছেড়ে দিবো।' তবে অভিযোগের সূত্র ধরে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান এই ছাত্রলীগ নেতা। তিনি বলেন, 'সরাসরি আসেন চা খাবো।'
কাউসার হোসেন পকেটের টাকা দিয়ে রাজনীতি করেন দাবি করে বলেন, 'আমি কোনোদিন থানা পুলিশ থেকে চাঁদাবাজি করিনি। কেউ কোনো দিন বলতে পারবে না। তবে দলের কর্মীদের মোটরসাইকেল আটকালে তদবির করি।'
অভিযোগের বিষয়ে অন্য ছাত্রলীগ নেতা রায়হান আজিজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি না রিসিভ করেননি।
দুই ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঠিক তদন্ত চান আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এমন অভিযোগ উঠলে অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করা হোক। তদন্তে যদি চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তাহলে সংগঠন ব্যবস্থা নিবে।'
একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ অভিযোগ আমলে নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এরইমধ্যে একজন কর্মকর্তা ঘটনার অনুসন্ধান করছেন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, 'অভিযোগের বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় কথা বলতে পারেন।'