শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বিরুদ্ধে বির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী ঘোষণা, তাদের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করা, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, হুমকি-ধামকি, মারধর সহ নানান অভিযোগ তুলে ধরে প্রেস ব্রিফিং করেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া।
সোমবার (৬ মে) দুপুর ২টার সময় শরীয়তপুর শহরের নিজ বাসভবনে তিনি নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন দীপু মিয়া বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলীয়
সকল নির্দেশনা মেনে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করছি।
কিন্তু শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রকাশ্যে তার পছন্দের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন এবং তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এমপি অপুর নির্দেশে তার স্ত্রী, ছেলে, জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বল আকন্দের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপর দিকে তার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ও আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন।
তারা প্রতিনিয়ত আমার আনারস মার্কার সমর্থকদের প্রচারণায় বাধা, হুমকি-ধামকি ও মারধর করে আসছেন। তাদের মোবাইল, পোস্টার ও লিফলেট ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও আমার পোস্টার, ব্যানার লাগাতে দিচ্ছেন না। কোথাও পোস্টার লাগালে তা ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসীদের আক্রমণে আমার একাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি পালং মডেল থানার ওসি, জেলা নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। শরীয়তপুর সদর উপজেলায় বর্তমানে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে, আগামী ২১ মে, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া আমি শরীয়তপুর সদর উপজেলাবাসীকে আস্বস্ত করে বলতে চাই, আমি আপনাদের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনের শুরু থেকে মাঠে ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো। যত হুমকি-ধামকি আসুক, আমি নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে যাবো না।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী কোন এমপির স্বজনরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু আমার চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। সে আমার সমর্থন না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সহধর্মিনী, আমার একমাত্র ছেলে সহ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান, আমার আপন কোন ভাই নাই। আমার চার বোনের মধ্যে বড় বোন মারা গেছেন। বাকি তিন বোন বেচে আছেন। এর বাইরে আমার পরিবারের অন্য কোন সদস্য নেই। এছাড়া আমি উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকেই সমর্থন করিনি।
এমপি সমর্থিত ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়ার প্রচারে বাঁধা, কর্মীদের মারধর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে প্রমাণ পেলে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর আপন চাচাতো ভাই।