প্রায় সাড়ে চার মাস আগে গঠিত ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক; চেয়ারম্যানসহ চার পরিচালকের পদত্যাগের মধ্যে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারসহ চার পরিচালকের পদত্যাগের পর রোববার (৫ মে) উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমানকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার নতুন পর্ষদ গঠনের বিষয়টি বিআরপিডির পরিচালক হারুন-অর-রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে প্রথম প্রজন্মের ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।
১৯৮৩ সালে প্রায় একই সময়ে গঠিত ইউসিবিএলের সঙ্গে একীভূত হওয়া নিয়ে আলোচনা এবং এনবিএলের পর্ষদে এর বিরোধিতা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে পর্ষদ ভেঙে দেওয়া ও পুর্নগঠনের খবর এল।
এর আগে আগের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২১ ডিসেম্বর অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগে ধুঁকতে থাকা এনবিএলের চেয়ারম্যান করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে, যিনি তখন মেঘনা ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন।
পদত্যাগ করা বাকি তিন পরিচালক হলেন- সিকদার পরিবারের একমাত্র সদস্য পারভীন হক সিকদার, ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম ও সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন।
পারভীন হক সিকদারের পদত্যাগের মাধ্যমে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে সিকদার পরিবারের আর কেউ রইলেন না পর্ষদে।
দশ সদস্যের নতুন পর্ষদে খলিলুর রহমানসহ আগের তিন পরিচালককে রাখা হয়েছে। পুরনোর মধ্যে আছেন উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ও সিকদার ইন্স্যুরেন্সের মনোনীত পরিচালক সফিকুর রহমান।
নতুন পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে এসেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক কমিশনার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট রত্না দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জহুরুল হুদা।
প্রতিনিধি পরিচালক হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একে এম তফাজ্জল হক, প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ ও আইনজীবী এহসানুল করিম।
নিয়ম ও বিধি ভাঙাসহ বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে নানা অনিয়মে ধুঁকতে থাকা বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক গত ২০২৩ সালেও প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। আগের বছরে লোকসান দিয়েছিল তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা।
গত ২১ ডিসেম্বর এনবিএল এর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, ঋণ বিতরণে নিয়ম না মানা, বিধি-বিধান ভেঙে ঋণ অনুমোদন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পর্ষদের অনাকঙ্খিত হস্তক্ষেপ করা এবং পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করার বিষয়গুলো।