দেশব্যাপি চলছে প্রচন্ড দাবদাহ, এর মধ্যে সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকার গহিনে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ড। শনিবার দুপুরে লাগা আগুন রবিবার দুপুর পর্যন্তও নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেনী ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ সহ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে বনের গহিনে লাগা আগুন নিভানোর কাজে যোগ দিয়েছে নৌবািনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও স্থানীয় সেচ্চাসেবক সহ প্রায় ৫ শতাধিক সদস্যরা।
বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা ষ্টেশনের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়িসংলগ্ন বনাঞ্চলে আগুন দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা মিলে আগুন নিভানোর কাজ শুরু করলেও পর্যাপ্ত পানির সংযোগ না থাকায় কাজ করতে পারেনী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে রবিবার ভোর ৫ টা থেকে বনে গহিনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে খুলনা, বাগেরহাট, মোংলা, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের ৫ টি ইউনিট। এরই মধ্যে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক, বন বিভাগ সহ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার রাতে কার্যক্রম না থাকায় রবিবার সকাল থেকে আগুনের লেলিহা ছড়িয়ে পরছে বনের চতুর্দিকে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার ধরে আগুন ঝলছে। এতে বন্যপ্রানী ও বনের বনজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা বলে জানান স্থানীয়রা। এই এলাকায় পানির সল্পতা থাকায় পর্যাপ্ত কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। তবে আগুন যাতে অন্য কোন দিকে ছড়াতে না পারে সে জন্য বনের মধ্যে ক্যানেল কাটা হচ্ছে, সহায়তা করছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা। এদিকে, সুন্দরবনে লাগা আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রনে আনতে দুপুর থেকে বিমান বাহিনীর সদস্যরা জেলিক্যাপ্টরের মাধ্যমে বনের আগুন লাগা এলাকায় পানি ছিটানোর কাজ করছে। নিয়ন্ত্রনে আসলে আগুন লাগার কারণ খোঁজা হবে বলে জানায় তারা। এব্যাপারে চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা রানা দেব কে প্রধান করে ৭ সদস্যে বিসিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এর প্রতিবেদন দাখিল করবে তদন্ত কমিটি বলে জানায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম।
সকাল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসন ও স্থানীয় স্বেচ্চাসেবক মিলে সবাই চেষ্টা করছে আগুন নিয়ন্ত্রনে। তবে আগুনের লেলিহা যেভাবে ছড়িয়ে পরছে, পর্যাপ্ত পানির যোগান না হলে আগুন থামানো কঠিন হবে। তার পরেও চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানায় স্বেচ্চাসেবক ও আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী।
ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো: মামুন বলেন, শনিবার দুপুর থেকে চেষ্টা করে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় তেমন কাজ করতে পারেনী। রবিবার ভোর ৫টা থেকে ভড়া জোয়ারের সময ভোলা নদী থেকে সংযোগ দিয়ে বনের আগুন নেভানোর কাজ করছি। আমাদের সাথে স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবক, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিমান বাহিনী, পুলিশ, বন বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবক সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহায়তা করছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সুন্দরবনে লাগা আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রন করতে পারি। যতক্ষন পর্যন্ত আগুন পুরোপুরী নিয়ন্ত্রন না হয়, ততক্ষন আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। চেষ্টা করে যাচ্ছি, সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
সর্ব শেষ গত ২০২১ সালে মে মাসে শরনখোলার ধানসাগর ষ্টশনের নাংলি এলাকায় আগুন লেগেছিল।