রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, দুর্নীতি অপচয় বন্ধ ও বিভিন্ন প্রজেক্টের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
শুক্রবার (৩ মে) রেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে কমলাপুর রেল স্টেশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব কথা বলা হয়।
সিপিবি আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম।
বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার ও কাজী রুহুল আমিন।
সমাবেশে নেতারা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ায় সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এরপর গণপরিবহন রেলের টিকিটের মূল্য বাড়লে সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও অতিষ্ঠ করে তুলবে। পণ্যের পরিবহন ব্যয় বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের উপর বর্তাবে।
নেতারা এ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, রেলের অপচয়, দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা দূর, এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি এবং রেলের বিভিন্ন প্রজেক্টের স্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।
সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বড় বড় প্রজেক্টের নামে রেলকে আধুনিকায়ন করার কথা বলা হচ্ছে অথচ এ টাকার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের দৌরত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার এদেরই পোষণ করে চলছে। সরকার শুধু সিন্ডিকেটের পাহারাদেরই নয়, সিন্ডিকেটের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। সরকার ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দুর্নীতি অপচয় ও ব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রেলকে আরও লাভজনক খাতে পরিণত করা যেত। এটি না করে রেলের ভাড়া বাড়ানোসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে দুর্নীতিবাজদেরই দায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রোজেক্টের ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নেই।
তিনি রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক, অন্যায় ও গণবিরোধী আখ্যায়িত করে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সব প্রোজেক্টের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। তিনি রেলের দখলকৃত জমি উদ্ধার ও দুর্নীতিমুক্তভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবহারের দাবি জানান।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, পরিকল্পিতভাবে নৌ-খাতকে ধ্বংস করা হয়েছে। রেলপথে খরচ বাড়িয়ে ও সংকুচিত করে রোড সিন্ডিকেট এবং বাস মালিকদের সুবিধা দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। রেলের ভাড়া বাড়ানোর মধ্য দিয়ে বাসের ভাড়া বাড়ানোর পথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। রেলে পদ খালি থাকলেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। বেসরকারি খাতে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের শত শত কোটি টাকা মুনাফা ও লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কমলাপুর রেলস্টেশন চত্বর প্রদক্ষিণ করে।
ভোরের পাতা/আরএস