বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: জাতীয় স্বার্থে একমত থাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের   রোববার থেকে চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাবেন   স্বৈরাচারমুক্ত করেছি, এখন সময় দেশ গঠনের: তারেক রহমান   প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে যমুনায় জামায়াত আমির   আমাকে রংপুরের উপদেষ্টা বিবেচনা করুন: ড. ইউনূস   সব আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি আমাদের আছে: গোলাম পরওয়ার   ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ২৭ প্রাণহানি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
দুদকের আসামি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি, গোপনে পদত্যাগ!
উৎপল দাস
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, ৬:৩২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণ মঞ্জুরিপত্র (Sanction Letter) ব্যতীত মার্কেন্টাইল ব্যাংক এর প্রধান শাখা হতে ব্যাক টু ব্যাক এল সি ও অন্যান্য ঋণ সুবিধার মাধ্যমে ৭কোটি সাইত্রিশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও ঋণ এর সুদ পরিশোধ না করার দায়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমানসহ অপর কিছু আসামীর বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন দুদক।

তবে, দুদকের জালে ফেঁসে যাওয়ায় গত দুই মাস আগেই গোপনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন  মো. হাবিবুর রহমান। গত ৩ মার্চ ব্যাংকের পর্ষদ বরাবর ৩ মাসের ছুটির নোটিশ দিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন তিনি

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে তৃতীয় প্রজন্মের এই ব্যাংকটি। এই ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে মো. হাবিবুর রহমান যোগ দেন গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই নানা অনিময়ে জড়িয়ে পড়েন হাবিবুর রহমান, এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, সরকারি সম্পত্তি বন্ধক দেখিয়ে প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: নামের প্রতিষ্ঠানকে ঋণ গ্রহণের নামে ৮ কোটি টাকা উত্তোলনপূর্বক সুদসহ ১০ কোটি তিরাশি লক্ষ বার টাকা একচল্লিশ পয়সা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা। তার মধ্যে অন্যতম পলাতক আসামি হিসেবে রয়েছেন বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমান। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ মতিঝিল থানায় মোট ১২ (বার) জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক সহকারী পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। মতিঝিল থানার মামলা নং জিআর ৯৭/২০১৮। দণ্ডবিধি ৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় দায়ের করা হয়। যাহা বর্তমানে মেট্টো স্পেশাল মামলা নং ২৭২/২২ হিসেবে চলমান রয়েছে।

এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা দণ্ডবিধি ৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা অর্ন্তভূক্ত আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। উক্ত প্রতিবেদনে ৪ নং আসামী হিসেবে বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমানকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। গত ১৮ জানুয়ারী দুদক উপসহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমানকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী, ক্রোকী ও হুলিয়া পরোয়ানা ইস্যুর জন্য আদালতে আর্জি জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিট অনুযায়ী এই মামলার অন্যতম আসামি হাবিবুর রহমান ২০০০-২০০৩ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে কর্মরত অবস্থায় ব্যাংকের গ্রাহক প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: এর নামে ঋণ প্রস্তাবের সুপারিশ করেন। এবং পরবর্তীতে পুন:তফসিলের (Reschedule) সুপারিশ করেন। তিনি উক্ত ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনের তৎকালীন ইনচার্জ হিসেবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: প্রতিষ্ঠানের CIB রিপোর্ট সম্পর্কিত অসত্য তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রস্তাব প্রতারণামূলকভাবে অনুমোদন করান। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি (NOC) না পাওয়ার ফলে উক্ত ঋণ প্রস্তাবের মঞ্জুরিপত্র (Sanction Letter) ইস্যু হয় না।

মো: হাবিবুর রহমান মার্কেন্টাইল ব্যাংকে যোগদানের পূর্বে প্রাইম ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন। প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: প্রতিষ্ঠানের লোন প্রাইম ব্যাংকে খারাপ অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণ মঞ্জুরিপত্র (Sanction Letter) ইস্যু না হওয়া সত্ত্বেও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখা কর্তৃক উক্ত ঋণটি অসৎ উদ্দেশ্যে প্রাইম ব্যাংক হতে অধিগ্রহণ (Takeover) করা হয়। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখার অন্যান্য কর্মকর্তার যোগসাজশে এমন প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। 

পরবর্তীতে হাবিবুর রহমান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখার ক্রেডিট ইনচার্জ হিসেবে অন্যান্য আসামীদের সাথে উক্ত ঋণ পুন:তফসিল (Reschedule) এর সুপারিশ করেন। কিন্তু উক্ত ঋণের মঞ্জুরিপত্র (Sanction Letter) ইস্যু না হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেশুনে গোপন করেন। যা মামলার চার্জশীটে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যাবহার হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে।

অনেকটা গোপনে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো মো. হাবিবুর রহমানকে ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]