সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তিন জন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তারা হলেন, বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাদের নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ
মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ১৯৫৭ সালের ১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
হাফিজ ১৯৮২ সালে ঢাকা জেলা আদালতে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন আইনজীবী হন।
তিনি ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে নিযুক্ত হন। ২৭ এপ্রিল ২০০৫-এ, হাফিজকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক করা হয়।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম
শাহিনুর ইসলামের জন্ম ১৯৫৮ সালের ৭ এপ্রিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক পড়াশোনা শেষে তিনি ময়মনসিংহ জেলা বারে যোগ দেন এবং দায়রা আদালতের পাশাপাশি উচ্চ আদালতে ফৌজদারি আইন অনুশীলন করেন।
তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি ও আপিলের আইন বিশেষজ্ঞ। তিনি নেগোসিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস অ্যাক্ট, শুল্ক আইন, আবগারি আইন এবং কোম্পানির আইনে মামলা-মোকদ্দমা মামলার আওতাধীন নাগরিক বিষয় পরিচালনা করেছিলেন।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ১৯৮৩ সালের ২০ এপ্রিল মুনসেফ হিসেবে জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগদান করেন এবং ২০০১ সালের জানুয়ারিতে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান।
তিনি নড়াইল, হবিগঞ্জে জেলা ও দায়রা জজ এবং ঢাকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে কাজ করেন।
২০১০ সালের এপ্রিল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর তিনি ২০১২ সালের মার্চে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের সদস্য নিযুক্ত হন।
এরপর ২০১৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে উন্নীত হন এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য হিসাবে পুনরায় নিযুক্ত হন।
বিচারপতি কাশেফা হোসেন
কাশেফা হোসেনের জন্ম ১৯৫৮ সালের ১ জুলাই। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিচারপতি কাশেফা হোসেন ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০০৩ সালে আপিল বিভাগের একজন অ্যাডভোকেট হিসেবে নথিভুক্ত হন। এরপর ২০১৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত জজ হিসেবে উন্নীত। তিনি বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত নারী বিচারকদের মধ্যে সপ্তম।
প্রসঙ্গত, আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত তিন বিচারপতিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে শপথবাক্য পাঠ করাবেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। তিনজনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াবে আটজনে।