হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর ও উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর ডিআইটি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
হেফাজতে ইসলামের এই নেতা বলেন, দুই মাস আগে মসজিদে নামাজ চলাকালে রাসেল পার্কের ভেতরে একটি অনুষ্ঠানে বিকট শব্দে গান বাজনা হচ্ছিল। তখন নামাজ শেষে মুসল্লিরা গিয়ে সেখানে ভাঙচুর করলে পুলিশ সেখানে যায়। পরদিন বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। সেই ঘটনায় এখন সিটি করপোরেশন মামলা করেছে। এতে হেফাজত নেতা ফেরদৌসুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে; অথচ তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে ছিলেন না।
মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দিয়ে মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, আইভী তিনবার সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ায় তার অহমিকা বেড়ে গেছে। আইভী অহংকারী হয়ে গেছে, তাই যা মন চায় তাই করছেন। ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখো নাই। ডিআইটি মসজিদ তার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে গেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আইভী চাচ্ছেন মসজিদগুলো দখলে নিয়ে তার মতাবলম্বীদের আস্তানা গড়ে দিতে।
মামলা আমরাও করবো। আমাদের লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করবো। পৌরসভার কোটি কোটি টাকা চুরি করা হচ্ছে। তোমরা চুরি করে আমাদের চোর বলছো। ওলামাদের বিরুদ্ধে জুলুম করলে আল্লাহ আইভীর ক্ষমতা টিকিয়ে রাখবে না। তোমরা চোখ রাঙালে আমরাও চোখ রাঙাবো।
তিনি বলেন, মসজিদের জায়গা ভাঙতে এলে লাশ পড়ে যাবে। তুমি (আইভী) তোমার কাজ করছো, আমাদের কাজ আমাদের করতে দাও। ঘাড়ে চেপে বসলে, আমরা জীবন থাকতে তোমাদের ছেড়ে দেব না।
মহানগর উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, রাজনীতিতে মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় চলে গেছে। কয়েকজন ঠিকাদার ছাড়া তার আশেপাশে কেউ নেই। এজন্য তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি আসলে আলোচনায় থাকতে চান।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেরুয়ারি নারায়ণগঞ্জের শেখ রাসেল পার্কে পার্কল্যান্ড রেস্তরার সামনে এসএসসি-৯৫ ব্যাচ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে একদল লোক হামলা করে ভাংচুর চালায়। সেই ঘটনার প্রায় দুই মাস পর গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এতে হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি ফেরদৌসুর রহমানকে প্রধান আসামিসহ শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানের সাউন্ড সিস্টেম পরিচালনাকারীদের মারধরসহ ১০ লাখ টাকার মালপত্র ক্ষতি ও ৩ লাখ টাকার জিনিস চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।