সামাজিক কর্মকাণ্ড বিশেষ অবদানের কারনে ব্যারিস্টার সুমনের জনপ্রিয়তা নিজ এলাকার গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশেই ছড়িয়েছিলো। অনেক বলতো নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান তিনি। সামাজিক অসঙ্গতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেও আলোচিত ব্যারিস্টার সুমন। তার জনপ্রিয়তা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীকে হারিয়ে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
এবার সেই ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে গরীব ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের শাড়ি বিতরন করছেন বন্ধুদের মাঝে। আর তা পেয়েছেন তার দুই বন্ধুর স্ত্রী। তার সেই দুই বন্ধু এই উপহার প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা যায়, পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে শাড়ি, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পোষাক আসে। ওই পোষাক তার নির্বাচনী এলাকার অসহায় গরীব দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য বলা হয়। কিন্তু ব্যারিস্টার সুমন গরীব দুস্থ মানুষের মধ্যে বন্টন না করে তার এসএসসি-৯৫ ব্যাচের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাইল গ্রামের পশু চিকিৎসক আব্দুল মুকিত ও গেরারুক গ্রামের মো. সানু মিয়ার স্ত্রীকে বিতরণ করেন।
এ নিয়ে সানু আহমেদ তার ফেসবুক আইডিতে লিখে স্ট্যাটাস দেন। তিনি লিখেন, ব্যারিস্টার সুমনের দেওয়া আমার বউয়ের জন্য যাকাতের সুতি শাড়ি, বাজার মূল্য প্রায় ২৮০ টাকা। এটি পিএস সোহাগের কারসাজি। আমার বউ এসব শাড়ি পরে না। একজন অসহায় মানুষ দেখে শাড়িটি দিয়ে দেব। আর দুলালের কথায় কেন ’৯৫ বন্ধু শুনতে হবে!
অপর ’৯৫ এর বন্ধু আব্দুল মুকিত লিখেছেন, ঈদের আগের রাত ১২টার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হানের মাধ্যমে আমার বউয়ের জন্যে শাড়ি পাঠাইছে ব্যারিস্টার সুমন। তবে ব্যারিস্টার সুমন হয়তো জানে না, সেটা নিখুঁত পরিচালনা করেছে পিএস সোহাগ। বাড়িতে নিয়ে খুলে দেখি এটা যাকাতের শাড়ি। ততক্ষনাৎ ফেরত পাঠানোর কোনো ওয়ে না পেয়ে, যাদের জন্য যাকাত খাওয়া প্রযোজ্য এমন একজন অসহায় মহিলাকে দান করে দিলাম। যারা আমার পোস্টে নেগেটিভ কমেন্ট করেন, তাদের কাছে বলছি, চোখের পানি আর বুক ফাটা কান্না কি এমনি এমনি আসে!
এমন পোস্টের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের মন্তব্য শুরু হয়। এমডি হযরত আলী নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন দুই নাম্বারী চলছে। আলী আক্কাস নামে আরেক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, সরকারি শাড়ি নিজের মানুষ মনে করে দিয়েছেন সুমন ভাই। শফিকুর রহমান সাপু লিখেছেন- শুরুতেই এ অবস্থা, না জানি ৫ বছরে কী হবে।
রিপন আমিন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, আপনি যথেষ্ট স্বাবলম্বী। যাকাতের শাড়ি কেন আপনার বউ পাবে? আপনিই বা কেন নিতে যাবেন? আপনার কি ভাবীর জন্য শাড়ি কেনার তৌফিক নেই। দামী শাড়ি হলে বিষয়টা সোস্যাল মিডিয়ায় না এনে নীরবে ভাবীকে গিফট করতেন। এখানে দুজনই সমান অপরাধী। আপনি কেন নিলেন? সোহাগ ভাই কেন দিলেন?
বিষয়টি এখন সরমগরম হয়ে উঠেছে চুনারুঘাটে।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও ফোন রিসিভ হয়নি। তাই তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যারিস্টার সুমন তার ফেসবুক পেইজে লাইভ করে বলেন, তিনি শাড়ী দেননি বন্ধুদের। যাদের মাধ্যমে বিতরন করা হয়েছে তারা হয়তো ভুল বশত এই কাজ করে থাকতে পারেন।