যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে একজন বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে নিউইয়র্কের কুইন্সে নিজের বাড়িতে গুলিতে নিহত হন তিনি।
নিহত তরুণের নাম উইন রোজারিও (১৯)। তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
কর্মকর্তারা বলেছেন, উইন রোজারিও এক জোড়া কাঁচি দিয়ে পুলিশ অফিসারদের দিয়ে তেড়ে যান। একপর্যায়ে কর্মকর্তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কিন্তু এই গুলি চালানোর প্রত্যক্ষদর্শী নিহত তরুণের ভাই পুলিশি বিবরণের বিরোধিতা করে বলেছেন, তার মা ছেলেকে আটকাচ্ছিলেন।
পুলিশ অফিসারদের বন্দুক থেকে গুলি করার দরকার ছিল না বলে জোর দিয়ে বলেন নিহতের ভাই।
পুলিশ গুলি চালানোর পরপরই উইন রোজারিওকে মৃত ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওজোন পার্কের ১০৩তম স্ট্রিটে তার পরিবারের দ্বিতীয় তলার অ্যাপার্টমেন্টে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টহল প্রধান জন চেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মানসিক যন্ত্রণায় থাকা এক ব্যক্তি সম্পর্কে ৯১১ নম্বরে ফোনকল পেয়ে দুজন অফিসার অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার পরে গুলির ঘটনা ঘটে।
সেখানে পরিস্থিতি ‘বেশ উত্তেজনাপূর্ণ এবং বিপজ্জনক’ ছিল বলে দাবি করেন জন চেল। পুলিশ মনে করছে, নিহত রোজারিও ৯১১ নম্বরে কল করেছিলেন।
টহল প্রধান চেল বলেছেন, অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার পর অফিসাররা রোজারিওকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি ড্রয়ার থেকে কাঁচি বের করে অফিসারদের দিকে তেড়ে আসেন। পরে উভয় অফিসারই রোজারিওর ওপর টেজারের মাধ্যমে গুলি করে পরাস্ত করেন।
কিন্তু রোজারিওর মা তার ছেলেকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন এবং এটি করতে গিয়ে তিনি ঘটনাক্রমে রোজারিওর শরীর থেকে টেজার সরিয়ে দেন বলে দাবি করেন কর্মকর্তারা। আর সেই সময়ে রোজারিও কাঁচি তুলে আবার অফিসারদের দিকে তেড়ে আসেন।
‘এই পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না’, চেলের দাবি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোজারিওর ১৭ বছর বয়সী ভাই উশতো রোজারিও এক সাক্ষাৎকারে পুলিশি বর্ণনার বিরোধিতা করে বলেছেন, তার মা এনকাউন্টারের পুরো সময়জুড়ে তার ভাইকে কোলে ধরে রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, “মা যখন তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন, তখন তারা (পুলিশ) তাকে টেজার দিয়ে গুলি করে। যখন টেজার দিয়ে গুলি করে আমার ভাই তখনও পড়ে যাননি। তাই একজন পুলিশ বন্দুক বের করে তাকে গুলি করে এবং সেসময়ও আমার মা তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন।”
উশতো এবং উইনের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও বলেছেন, তাদের পরিবার ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে অভিবাসী হয়। উইনের স্বপ্ন ছিল মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া। তবে গ্রিন কার্ড পেতে বিলম্বের কারণে তার সেই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছিল।