প্রকাশ: সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪, ৫:২৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা শুক্রবার এক নির্বাচনী পথসভায় বলেছেন, আমি ১৭ জনকে পুলিশে চাকরি দিয়েছি। তার মধ্যে একজনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছি। এই টাকা দিয়ে একজনকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছি এবং বাকি টাকা সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সামনে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়েছি।
সাবেক কৃষিমন্ত্রীর খালাতো ভাই হীরা স্থানীয় কয়ড়া বাজারে এক নির্বাচনী পথসভায় মাইকে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এ কথা বলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরার এই বক্তব্যটি ইতিমধ্যেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ধনবাড়ির বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ তার এই বক্তব্যে একদিকে যেমন হতবাক হয়েছেন, অপরদিকে তারা বিশ্বাসও করেন যে, উপজেলা চেয়ারম্যান গুপ্ত কথাই স্বীকার করেছেন। ধনবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, আপন খালাতো ভাই কৃষিমন্ত্রী থাকার সুবাদে তিনি কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে চরম স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে উপজেলার কাজকর্ম করছেন। ধনবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে তার নিজস্ব লোকজনকে সভাপতি করে শিক্ষক নিয়োগের নামে নির্লজ্জ বাণিজ্য করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ধনবাড়ি বাজারে খাস জমিতে ৬ টি দোকান ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দোকানের মালিকদেও কাছ থেকেও মোটা অংকের উৎকোচ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন দোকান মালিকরা। উপজেলা চেয়ারম্যানের খালাতো ভাই সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হওয়ায় কেউ প্রকাশে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার উম্মুক্ত করে দিলেও ধনবাড়ির ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাতিক্রম ঘটনা। গত ৩ মার্চ সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক তার খালাতো ভাই হীরাকে ধনবাড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান পার্থী হিসেবে প্রকাশ ঘোষণা দিয়ে তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছেন। ধনবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই এক তরফাভাবে সাবেক মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এটা এমপির অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত। এটা তিনি করতে পারেন না। পুলিশের চাকরি দিতে টাকা নেওয়ার ঘটনায় এলাকার মানুষের কাছে প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে তিনি পুলিশের চাকরি দিলেন? পুলিশের চাকরি তো দেন আইজিপি। উপজেলা চেয়ারম্যান কীভাবে পুলিশে চাকরি দিলেন? আর টাকা নিয়ে পুলিশে চাকরি দিতে কাকে তিনি টাকা দিয়েছেন?
এসব প্রশ্নই এখন ধনবাড়ির স্থানীয় মানুষের মুখেমুখে। সাবেক মন্ত্রীর খালাতো ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরার প্রকাশ্যে পুলিশের চাকরি দেওয়ার নামে ৬ লাখ টাকা নেওয়া এবং মন্ত্রীর সামনে টাকা ভাগ বাটোয়ারার খবরে এলাকায় মুখোরোচক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ খবরটি এখন টক অব দি ধনবাড়ি।