ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টির চক্রের ১৭ সদস্য গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কবির হোসেন (৪০),জামান (৩২), রুবেল (৩০), আলমগীর (৩৮), ইরফান (৪৫), মোকসেদ (৪৫), ইউনুস (৪৫), নেসার আলী(৪৫), বোরহান (৪০), হাসান( (৩৮), সাব্বির শেখ(২৬), আজিজুল (৪০), সুমন(২৪), লিটন (৪৮), সাদ্দাম (৩০),তোফাজ্জল (৪৫), মোহন চন্দ্র (৩৬)।
আজ রবিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গত ৯ মার্চ দুপুরে ফরহাদ মিয়া (২২) অটোরিক্সা চালানোর জন্য দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আব্দুল্লাহপুর বাজারে যায়। সেখান থেকে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ফরহাদ মিয়ার অটো ভাড়া করে রাজেন্দ্রপুরে র্যাব-১০ এর পার্শ্বে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের আন্ডারপাসের সামনে পৌছালে তাদের আরো লোক আসবে বলে অটো থামাতে বলে। তারপর অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা কৌশলে অটোচালক ফরহাদের নাকের সামনে চেতনানাশক মেশানো রুমাল ধরে রাখার কিছুক্ষনের মধ্যে ফরহাদ মিয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের আন্ডারপাসে রোডের পার্শ্বে ফেলে দিয়ে তার মিশুক অটো ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে জ্ঞান ফিরলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেন। এ ঘটনায় ফরহাদ মিয়া (২২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা রুজু করেন।
এছাড়াও গত ১২ মার্চ অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা অটোচালক ইন্দ্রজিৎ চন্দ্র (৪০)-কে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর যাবে বলে ভাড়া করে কদমপুরে অবস্থিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পুলিশ লাইন হতে ১০০ মি. পশ্চিমে যাওয়ার পর যাত্রীবেশে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা কৌশলে অটোচালক ইন্দ্রজিৎকে চেতনানাশক মেশানো রুমাল নাকের সামনে ধরে রাখে তার কিছুক্ষনের মধ্যে অটোচালক ইন্দ্রজিৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা তাকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের পার্শ্বে ফেলে রেখে তার অটোসহ নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ইন্দ্রজিৎ (৪০) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা রুজু করেন। একের পর এক অজ্ঞানপার্টি কর্তৃক এ ধরনের অটো ছিনতাই এর ঘটনার প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার একটি চৌকস তদন্ত টিম সংঘবদ্ধ এই অজ্ঞানপার্টিকে ধরার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করে। তদন্ত টিম প্রতিটি ঘটনার প্রকৃতি ও যোগসূত্র বিচার বিশ্লেষন করে তথ্য সংগ্রহ করে। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের সনাক্ত পূর্বক তাদের অবস্থান নির্নয় করে।
একটি চৌকস আভিযানিক দল কেরাণীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া এবং ডিএমপির বিভিন্ন এলাকা হতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে উপরে উল্লেখিত মামলার ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা অজ্ঞানপার্টির ১৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দীন কবির, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন অর রশিদ প্রমুখ।