রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরু হচ্ছে শুক্রবার (১৫ মার্চ) থেকে। নির্বাচন ঘিরে রেকর্ডের দোরগোড়ায় ভ্লাদিমির পুতিন।
প্রায় ২৪ বছর ধরে দেশটিতে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পুতিন এবার ভাঙতে যাচ্ছেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই নেতা স্তালিন এবং ব্রেজনেভের রেকর্ডও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় রাশিয়ায় পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন পুতিনই।
শুক্রবার শুরু হয়ে তিন দিনব্যাপী ভোটাভুটি চলবে রোববার পর্যন্ত। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও ভোটের মাঠে আছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। লড়াইয়ে নেমেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির লিওনিদ স্লাতস্কি, নিউ পিপল পার্টির ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ এবং কমিউনিস্ট পার্টির নিকোলাই খারিতোনোভ।
এদিকে নির্বাচনে সব ভোটারকে ভোট দেয়ার আহবান জানিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত অঞ্চলসহ রাশিয়ার সব ভোটারকে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে অংশ নিতে বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
এক ভিডিও বার্তায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পুতিন বলেন, আমাদের এখন ঐক্য ও সংঘবদ্ধ হয়ে একসাথে এগিয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক। আপনাদের দেয়া প্রতিটি ভোটই মূল্যবান। আগামী তিনদিন আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহবান জানাচ্ছি।
এবারই প্রথম ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট দেবেন রুশ ভোটাররা। প্রবাসীদের জন্য ১৪৪ দেশে বসানো হয়েছে ২৯৫টি ভোটকেন্দ্র। রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড এবং রুশ দখলকৃত ইউক্রেনের অঞ্চল দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসন এবং ক্রিমিয়া মিলে মোট ভোটারের সংখ্যা ১১ কোটি ২৩ লাখ।
প্রবাসী রুশ নাগরিকদের মধ্যে ভোটার প্রায় ১৯ লাখ। এছাড়া কাজাখস্তানে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র ঘিরে গড়ে ওঠা রুশ উপশহরে ভোটার রয়েছেন প্রায় ১২ হাজার।
এবারের রুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত আড়াই দশকে রীতিমতো বিরোধীহীন দেশটির রাজনীতিতে অপ্রতিরোধ্য ভ্লাদিমির পুতিন। নিজের দীর্ঘ শাসনামলে মস্কোকে বিশ্ববাসীর সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। রুশ জনগণের কাছে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
এমনকি বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বন্দ্বের কারণে পশ্চিমাদেশগুলোর একঘরে করার সব প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়ে, উল্টো বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের নজির গড়েছে রাশিয়া। যার সব কৃতিত্ব রুশ প্রেসিডেন্টের। পশ্চিমাদের শত্রুতে পরিণত হলেও একরোখা পুতিনকে যেনো কোনো কিছুতেই আটকানোর সাধ্য নেই কারো। তাই সব ছাপিয়ে আবারও জয়ী হয়ে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
প্রায় ২৪ বছর ধরে রাশিয়ার ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পুতিন এবারের নির্বাচনে জিতলে রীতিমতো নজির স্থাপন করবেন। ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির প্রার্থী পুতিন যদি ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন, তা হলে তার ক্ষমতার মোট মেয়াদকাল পৌঁছাবে ৩০ বছরে। এ অবস্থায় তার সামনে এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই নেতার রেকর্ড ভাঙা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এর আগে, সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রাশিয়ায় ক্ষমতায় ছিলেন জোসেফ স্তালিন ও লিওনিদ ব্রেজনেভ।
ভোরের পাতা/আরএস