প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪, ৭:৩৫ পিএম আপডেট: ১৪.০৩.২০২৪ ৭:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে ভুট্টার চাষ হয়েছে। মাঠে মাঠে যেন সবুজের সমারহ। গাছের মাথায় ফুল, গাছে গাছে হলুদ বর্ণের ভুট্টা ধরতে শুরু করেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে ওই সকল গাছগুলো। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকায় কৃষকের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে এলাকার কৃষকদের। গম, ধান, রসুন, বাঙ্গী-তরমুজ চাষের পাশাপাশি কৃষকরা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বেশী।
যে কারণে গুরুদাসপুরে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভুট্রা চাষ লাভজনক হওয়ায় বিভিন্ন জাতের ভুট্টা আবাদে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণসহ মাঠে গিয়ে উন্নত পদ্ধতিতে বীজ বপনে সহযোগিতা করছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন অ লে কৃষকদের সভার মাধ্যমে ভুট্টা চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষকরা ভুট্রা চাষে বেশি উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় ১টি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নের ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫০ হেক্টর। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৫ শত ৫০ মে.টন নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ৮শ’১০ হেক্টোর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছিল ৮হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন। এ বছর আরো অধিক পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সরেজমিন গুরুদাসপুর পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবুজে-সবুজে ভরে উঠেছে ভুট্টা খেত। সবুজ রঙের গাছগুলো দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। গাছে গাছে হলুদ বর্ণের ভুট্টা ধরতে শুরু করেছে। ভুট্টা খেতগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও পরিচর্যা কাজে ব্যস্ত কৃষকরা। গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট উইনিয়নের যোগেন্দ্র নগরের ভুট্রা চাষী মোঃ ইয়াকুব মন্ডল, নাজিরপুর ইউনিয়নের মাসুম ও বাবুল, খুবজীপুর ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের বাবলু, কালাকান্দোরের আব্দুল মান্নান, মশিন্দা ইউনিয়নের কান্দিপাড়ার রেজাউল করিম রঞ্জু, ধারাবারিষা ইউনিয়নের মোঃ সোবাহান জানান, তারা প্রতি বছর ভুট্টা আবাদ করে থাকেন এবং আবাদের পরিধিও বাড়াচ্ছেন। তারা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টা আবাদ করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুট্টা আবাদের ওপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে না এবং উৎপাদন খরচ অর্থাৎ সার, সেচসহ অন্যান্য খরচ কম হওয়ায় ভুট্টা চাষে তাদের মতো অনেক কৃষক দিন দিন আগ্রহী হয়ে ওঠছেন। এই এলাকার ভুট্টার দানা এবং রঙ ভালো হওয়ায় বাজারে চাহিদা অনেক বেশী। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ভুট্টা কিনেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, চলতি মৌসুমে গুরুদাসপুর উপজেলায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১১হাজার ৫শ’ ৫০ মেট্টিকটন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রন্তিক চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ভুট্টা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া অব্যহত রয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করা যায় ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।