দেশের অন্যতম ভোজ্যতেল সরবরাহকারী ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ভোক্তাদের সুবিধায় একদিকে যেমন বেশি পরিমাণে তেল আমদানি করেছে, অন্যদিকে দামের ক্ষেত্রেও নিয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। অন্য সবাই যখন বেশি দামে তেল বিক্রি করছে, সেখানে এস আলম গ্রুপ সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে তা বিক্রি শুরু করেছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের মইজ্জারটেক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটিতে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তর অভিযান চালায়। এ সময় তারা দেখতে পায়, এস আলম গ্রুপ সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১ টাকা কমিয়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬২ টাকায় বিক্রি করছে। সরকার নির্ধারণ করেছে ১৬৩ টাকা প্রতি লিটার।
এ ব্যাপারে এস আলম গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারনির্ধারিত সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের দাম ১৬৩ টাকা। আমরা ১৬২ টাকা লিটার বিক্রি করছি। লিটারে ১ টাকা ছাড় দিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রামে এস আলম এডিবল অয়েল মিল নগরের মইজ্জারটেক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কারখানায় গিয়ে এমন চিত্র দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘খুচরা বাজারে তেলের দাম চড়া। তাই আমরা এস আলমের কারখানায় ও সিটি গ্রুপের তেল পরিশোধন কারখানায় গিয়েছি। তারা নিয়ম মানছে। আশা করছি, সরকারনির্ধারিত দরের তেল কাল থেকে বাজারে পাবেন ভোক্তারা।’
গতকাল বিকেলে নগরের রিয়াজুদ্দীন বাজারের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এ সময় সঙ্গে ছিলেন কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোর্শেদ কাদের এবং কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল।
পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান চলাকালে মূল্যতালিকা না থাকা, কেনাবেচার রসিদ না থাকাসহ বিভিন্ন অসংগতি পায় অভিযান পরিচালনাকারী দল। প্রথম দিন কোনো জরিমানা ছাড়াই বাজার মনিটরিং শেষ হয়।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজ-আলুসহ সবজির বাজার মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। খেজুর ও ফলের দাম একটু বাড়তি রয়েছে। যদি কেউ বেশি মজুত করেন অথবা যেকোনো অসাধু উপায়ে দাম বাড়াতে চান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘পবিত্র রমজানে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যেন কারসাজি করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কেউ মুনাফা লাভ করতে পারবে না। বাজারে আমাদের কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে।’
ভোরের পাতা/আরএস