শনিবার ৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২০ পৌষ ১৪৩১

শিরোনাম: কাকরাইল মসজিদ থেকে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা   ট্রাম্পের সাজা হওয়া নিশ্চিত, তবে কারাদণ্ড নয়   বাসা থেকে লুট হওয়া ৩২ ভরি সোনাসহ গ্রেফতার ২   ইসরায়েলকে আরও ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র   ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়াদের নিয়ে যা বললেন সারজিস   অভিনেতা মুশফিক ফারহান আইসিইউতে   বিপিএলের ঢাকা পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
লণ্ডনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের শহীদ দিবস উদযাপন
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৪:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

লণ্ডনে আজ শীতের তীব্রতাটা হঠাৎ করেই যেন বেড়ে গিয়েছিল। সঙ্গে হিমেল হাওয়া। তারওপর রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা। এতসব প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে আমরা ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও ইলফোর্ড টাউন কাউন্সিলর সায়মা আহমেদের যৌথ আয়োজনে উদযাপন করি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। 

আমাদের আয়োজনটা ছিল শহরের প্রাণকেন্দ্রে, প্রধান সড়কে, খোলা আকাশের নীচে। প্রশস্ত রাস্তার পাশ ঘেঁষে আমরা টাঙ্গিয়ে দিই বাংলা ভাষায় লেখা আমাদের ব্যানারটি। ব্যানারে অঙ্কিত ছিল রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ছবি। সামনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। কারো হাতে মাইক্রোফোন, কারো হাতে ফুল, কারো হাতে মোবাইলের স্ক্রীণে কবিতা কিম্বা গানের কথামালা। 

আর আমাদের সামনে গভীর মনযোগ দিয়ে চিত্রাঙ্কন করছিল আমাদের সন্তানেরা। কচি হাতের কোমল ছোঁয়ায় মনের মাধুরী মিশিয়ে রঙের বর্ণিল বিন্যাসে ওদের কেউ সাদা পাতার বুকে  এঁকে যাচ্ছিল শহীদ মিনার, কেউ ব্রিটেন ও বাংলাদেশের পতাকা, কেউ রংধনু, কেউ পুষ্পাঞ্জলি। 

কাউন্সিলর সায়মা আহমেদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় একুশের গান, দেশাত্ববোধক গান ও কবিতায় আমরা জমিয়ে তুলেছি পথসভাটি। উইকএণ্ডের শপিং-এ আসা পথচারীরা থমকে দাঁড়িয়ে গভীর আগ্রহ নিয়ে শুনছিলেন বাংলা গান ও কবিতা। হৃদয়ঙ্গম করছিলেন বাংলা ভাষার মাধুর্য, বাংলা গানের সুর লালিত্য। 

কখনো একক পরিবেশনায়, কখনো সম্মিলিত পরিবেশনায় আনন্দ ছড়িয়ে পড়ছিল পুরো ইলফোর্ড শহর জুড়ে।পথচারীরা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে যুক্ত হচ্ছিলেন আমাদের সঙ্গে। নিজ নিজ ভাষায় পরিবেশন করছিলেন তাদের প্রিয় গান। বহুভাষার মানুষের অংশগ্রহনে আমাদের আয়োজনটি কার্যত রূপ নেয় বহু সংস্কৃতির মানুষের একটি মিলন মেলায়, যা কিনা পরিসরে সংক্ষিপ্ত হলেও নৃতাত্ত্বিক তাৎপর্য বিবেচনায় বৃহৎ ও ব্যাপক গুরুত্ববাহী। 
 
সম্মিলিত কণ্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’— একুশের এই গানটি দিয়ে শুরু হয় আমাদের আয়োজন। বিভিন্ন পর্যায়ে গান পরিবেশন করেন আরফুমান চৌধুরী ও কয়েকজন পথচারী। কবিতা পাঠ করি সিন্থিয়া দাস ও আমি। একুশের ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক। একেবারে শেষে প্রীতম সাহার নেতৃত্বে সম্মিলিত কণ্ঠে দেশ প্রেমের গান দিয়ে শেষ হয় আমাদের একুশের উদযাপন। সমগ্র আয়োজনে বিভিন্নরকম সহযোগিতা করে যাঁরা অনুষ্ঠানটিকে সর্বাঙ্গীনভাবে সফল করে তোলেন তাঁরা হলেন রহমান জিলানি, অধীর রঞ্জন দাস, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সিন্থিয়া দাস, মোহাম্মদ খালেদ মিল্লাত, পল্লবী, বুলবুল হাসান, মিনারা সুলতানা, মাহবুব তোহা, ইফতেখার হাসান, ববি প্রমুখ। 
 ইলফোর্ডবাসী চলার পথে যারা অংশ নিতে পেরেছেন, আজ আমাদের এই পথসভা শেষে তাঁরা বাড়ি ফেরেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ঘ্রাণ বুকে নিয়ে। 

আর আমাদের শিশুদের যারা অংশ নিয়েছে চিত্রাঙ্কনে তারা বাড়ি ফিরল কোমল মনে কিছু সুবর্ণ স্মৃতি তৈরি করে, যে স্মৃতি বুকে নিয়ে আজ থেকে অনেক অনেক দিন পরে, যখন ওরা বড় হবে, এই সুবর্ণ স্মৃতির সূত্র ধরে তারা খুঁজে নেবে তাদের শিকড়ের উৎস, তাদের আত্মপরিচয়ের ঠিকানা— তারা খুঁজে নেবে বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ। আর এভাবেই নির্মিত হবে প্রজন্মের সঙ্গে প্রজন্মের আত্মিক বন্ধন— এবং তা হবে বিশুদ্ধ সাংস্কৃতিক চেতনায়; যে চেতনার নাম বাংলা সংস্কৃতি— যে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি পরম যত্নে লালন করে দেশে ও প্রবাসে আমরা গর্ব করি। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]