প্রকাশ: সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৩:৩১ এএম আপডেট: ২৬.০২.২০২৪ ৩:৪৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ
বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশ। আর সেখানে শিক্ষার্থীদের কয়েক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জামালপুরের ইসলামপুরের গোয়ালিনী ইউনিয়নের ডিগ্রির চর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ৪টায় শুরু হলেও বেলা ১টা থেকেই উচ্চ শব্দে মাইকিংসহ সকাল থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
চর গেয়ালীনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরভক্ত দুদু মোল্লা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি। এ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামসহ ৫ জনকে বিশেষ অতিথি করা হয়।
মন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেল ৪টার দিকে স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঠের প্রবেশ পথে দুই পাশে দাঁড় করিয়ে মন্ত্রীকে বরণ করা হয়। সেখানে ধর্মমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আজ রোববার ৫টি থেকে ৬টি ক্লাস করার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের কারণে একটি ক্লাস করিয়েই পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে কিছু শিক্ষার্থীদের কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করোনার পর মাঠে নামিয়ে সারিবদ্ধ করে মন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য বেশ কিছুক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
কয়েকজন অভিভাবক বলেন ‘আমাদের সন্তানদের রাজনীতি করার জন্য স্কুলে পাঠাই না। তাদের আমরা লেখাপড়া করার জন্য স্কুলে পাঠানো হয়। কেন ক্লাস বন্ধ রেখে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা হল। আবার আমাদের সন্তানদের দাঁড় করিয়ে রেখে মন্ত্রীকে স্বাগত জানানো হলো কেন। তাদের যা ইচ্ছা তারা তাই করল। মনে হচ্ছে দেশে কোনো নিয়ম নেই, কোনো আইন নেই।’
স্কুলে পাঠ দান বন্ধ করে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলতে ডিগ্রির চর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের মোবাইল ফোনে আজ রোববার বিকেল ও সন্ধ্যায় কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
কর্মী সমাবেশের সভাপতি চরগোয়ালিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরভক্ত দুদু মোল্লার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে না পেলেও অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক চরগোয়ালিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম মোবাইল ফোনে বলেন- ‘সাড়ে ৩টায় মাইকিং শুরু হয়েছে। আর মন্ত্রী এসেছেন বিকেল ৪টার দিকে। এতে স্কুলের ক্লাসের কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা না। আর একজন মন্ত্রীকে স্কুলে এনে কিছু দাবির কথা বলা হয়েছে। তাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠান করা হয়েছে।’
এ সব বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে স্কুল বা পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখে কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ নেই। কে কীভাবে অনুষ্ঠানটি করল তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। কেউ অভিযোগ দিলে আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’