পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের শক্তিতে বলিয়েন বাংলাদেশ ভারত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও কৌশলী নীতিতে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক প্রশংসনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। এর সঙ্গে বন্ধু রাষ্ট্র ভারত-নেপালের ঘনিষ্ঠ আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করছে।
ভারতের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ইন্দো বাংলা ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন এর মৈত্রী সম্মেলন যোগ দিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ভারতের কলকাতায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা উল্লেখ্য করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকার এবং তাদের জনগণ বাংলাদেশকে অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। ভারতের অসংখ্য সাহসী সৈনিক ও জনগণ আমাদের জন্য জীবন দিয়েছে। এক কোটি বাঙালি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, খাবার, চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহসহ সকল সহযোগিতা ভারতের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। বাংলাদেশ- ভারতের মিত্র বাহিনীর অভিযানে আমরা ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে নানক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথায় বলি, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ভারতীয় শহীদদের রক্ত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদের আত্মত্যাগ- এ দুইটি দেশেই প্রজন্ম থেকে প্রজমান্তরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মিলবন্ধন তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমরা যেমন ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি। সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক, সামাজিক সহযোগিতার জোরদারে উভয় দেশে জনগণের মধ্যে নানান ক্ষেত্রে যোগাযোগ হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ-ভারত ও নেপালের সম্পর্কে অত্যন্ত গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এতটা মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।
বিভিন্ন সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে ভিসা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা সহযোগিতা অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়গুলো চুক্তি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশের-ভারত বড় ব্যবসায়িক বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। টানা চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সাথে ভারতের বাণিজ্যিক ব্যবস্থা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দিমুখী বাণিজ্যের অচিরেই ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে অনুমান করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারত ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব বর্তমান সামগ্রিক বন্ধুত্বের জায়গায় করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি একসাথে জঙ্গি মোকাবেলা আঞ্চলিক এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য সহযোগিতা সংযোগ কৌশলগত বিষয়ে অংশীদার হয়ে কাজ করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা সম্মান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় গভীর থেকে গভীর হোক।
এসময় উপস্তিত ছিলেন, ড.সুকান্ত মজুমদার এমপি, জি-২০ প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ইন্দো বাংলা ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন স্বপন মজুমদার, বিধায়ক অগ্নিমিত্র পাল, বিশেষ্ট বিজ্ঞানী যিষ্ঞু বসু, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। বাংলাদেশের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, শফিউল আরম চৌধুরী নাদেল এমপি, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম এমপি,এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দলিব ইলিয়াস প্রমুখ।