শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২ পৌষ ১৪৩১

শিরোনাম: রাজধানীর সচিব নিবাসেও আগুন   সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেয়ার সময় বাড়ল   দেশে ফিরেই নতুন বার্তা দিলেন মিজানুর রহমান আজহারী   ভারত থেকে চোখ রাঙিয়ে বাংলাদেশ শাসনের চিন্তা করবেন না   হাসিনা ও তার দোসরদের নথি চাওয়ায় সচিবালয়ে আগুন: রিজভী   বিএনপিকর্মী হত্যায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার    সিরিয়ায় অতর্কিত হামলায় ১৪ পুলিশ নিহত   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
চাকরি করেই কোটিপতি ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা!
আরিফুর রহমান
প্রকাশ: শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৬:৫৭ পিএম আপডেট: ২৪.০২.২০২৪ ৬:৫৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

একজন সরকারি চাকরি করে কত টাকা আয় করে একটি বাড়ি তৈরি করা যায়। সচেতন নাগরিক হিসেবে সবারই রয়েছে জানা। তবে ‘আঙুল ফুলে কলা গাছ’ হলে তাহলে তো অল্প দিনেই সম্ভব। এমনই অভিযোগ উঠেছে পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিস সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহীন আলমের নামে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সুরক্ষা সেবা বিভাগে ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাকির হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা সত্ত্বেও অনেক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী নানা পন্থায় অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে যাচ্ছে। তেমনি সেবাধর্মী খ্যাত প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মরত পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহীন আলম নিয়োগ বানিজ্য, বদলী ও টেন্ডার বানিজ্যর তদবির করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে নিজগ্রাম গুঠুরী ও শ্রীফলতলা কালিয়াকৈর, গাজীপুর জেলার কৃষক শ্রেণির লোকজনকে তাদের ছেলে বা আত্মীয় স্বজনকে চাকুরী দিবে বলে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা দেওয়া বেশিরভাগ লোকজনকে চাকরি না দিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করে। তার প্রভাব ও সরকারি চাকরি করার কারণে অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন কারো কাছে মুখ খুলে অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছে। একদিকে সন্তানের চাকরি না পাওয়ার কষ্ট অন্যদিকে টাকা খোয়ানোর কারনে গরীব লোকজন দিশেহারা। 

অভিযোগ সূত্রে আরো বলা হয়েছে, কেউ কেউ সন্তানের চাকরি কথা ভেবে বসতভিটে মাটি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পথে পথে জীবনযাপন করছে। জনপ্রতি চাকরি প্রার্থী থেকে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহীন আলম। এসব টাকা দিয়ে সম্প্রতি কালিয়াকৈর হাইওয়ে টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের রাস্তার পাশে বিলাশ বহুল বাড়ী নির্মাণ করেছে। বাড়ীটি ‘শাহীন ভবন’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। যার ঠিকানা শ্রীফলতলী, কালিয়াকৈর, গাজীপুর। টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের পাশেই বিলাশ বহুল এই ৮ তলা ভবনটি তিনি গড়ে তুলেছেন।
সূত্র জানায়, শাহীন আলমের গাফলতি ও দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণে সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারে হাজার হাজার দোকান পুড়ে দেশের কয়েকশ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পথের ফকির হয় কয়েকশ দোকান মালিকরা। তিনি অবৈধভাবে ফায়ার সার্ভিসে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সরবরাহ করেন। এমনকি টেন্ডার ও বদলী বানিজ্যের সাথে জড়িত থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা ভোরের পাতাকে বলেন, ‘তিনি হচ্ছে বর্তমান ডিজির লোক। তার অনেক ক্ষমতা। তার যা মন চায় তিনি তাই করেন। কাউকে হিসেব করে তিনি কোন কাজ করেন না।’  

মন্ত্রনালয়ের অভিযোগের সূত্র নিয়ে সরেজমিনে গেলে ভোরের পাতাকে স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূর্ণ বাড়িটি তৈরিতে ২ বছর সময় লেগেছে। বিদেশি ফিটিংস এবং উন্নতমানের টাইলস দিয়ে তৈরি ৮ তলা বাড়ির বেজমেন্ট পার্কিং এর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ভবনটির প্রথম তলায় ‘মধুমতী এগ্রো ফিড এন্ড হ্যাচারীজ বাংলাদেশ লিমিটেড এর কর্পোরেট শাখা এবং দ্বিতীয় তলায় ‘আরডিআরএস বাংলাদেশ ‘এর এনজিও অফিস খোলা হয়েছে। এই বাড়িটির বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে। তারা আরো বলেন, তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকারি চাকরি করেন। তাদের অনেক ক্ষমতা তাদের সাথে কথা বলতেও ভয় লাগে। কারণ তার স্ত্রী হচ্ছে পুলিশ কখন কারে মামলা দিয়ে দেয়। তাছাড়া তাদের বাড়িতে অনেক বড় মাপের লোকজন আসে। এতেই বুঝতে পারি তারা কত ক্ষমতাশালী।

বাড়িটির তত্বাবধানে থাকা ফিরোজ ভোরের পাতাকে বলেন, দুই বছর হয়েছে আমি এইখানে চাকরি করি। বাড়ি দেখাশোনা বাবদ ২০ হাজার টাকা বেতন পাই। আমরা যতদূর জানি তিনি ভালো মানুষ।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে তিনি ভোরের পাতাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কে-কি জমা দিলো এটা দেখার বিষয় না। আমার কিছু নেই। আপনার লেখার দায়িত্ব আপনি লেখুন। আমার আগুন পানি দিয়ে নেভানোর কাজ আমি তাই করবো।’

এই বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, বিএসপি(বার), এনডিসি, পিএসসি, জি, এম ফিল সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]