ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের চাপ সামাল দিতে এক বছর পর আগামী মার্চে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে যাচ্ছে সরকার। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ খাতে যথেষ্ট ভর্তুকি দিয়েছি। এবার কমাতে চাই। তাই এখানে সমন্বয় করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সুবিধা বজায় রাখতে এই সমন্বয় জরুরি।
শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দিনে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো। পাঁচ বছরে ৯ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিলো। কিন্তু আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি।
এর আগে সবশেষ ২০২৩ সালের মার্চ থেকে খুচরায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন সরকার বলেছিল, নিয়মিত মূল্য সমন্বয়ের অংশ হিসেবে দাম বাড়ানো হয়।
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে কাদের বলেন, দলটির নেতারা বলছেন, তাদের আন্দোলনে সরকারের পতন অবশ্যই হবে। কিন্তু নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের মহড়া দিয়েছে, আগুন সন্ত্রাস করেছে। আমরা তাদের এই আন্দোলনের অর্থ বুঝি। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া আন্দোলন সফল হবে এমন নজির কোথাও নেই। তারা অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে বর্তমানেও ব্যর্থ।
তিনি বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার- বিএনপি এখন হতাশায় ডুবে আছে। তাদের নেতাকর্মীরা সারা বাংলাদেশের কর্মীদের ক্ষমতার মুলা ঝুলিয়েছিলো। শেষে দেখা গেলো তারা ভুল আর নেতিবাচক রাজনীতি করে যাচ্ছে। তারা এখন নিশ্চই স্বীকার করবে- তাদের আন্দোলন ভুল ছিলো, নির্বাচনে না আসা সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বিধা আছে। প্রতীক যেহেতু নাই, এমন অবস্থায় স্বতন্ত্র হয়ে বিএনপির অনেকেই নির্বাচন করবে। জাতীয় রাজনীতি আর গ্রাসরুটের রাজনীতির পার্থক্য আছে। কেন্দ্রীয় নেতারা যে যাই বলুক তৃলমূলে অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকতেই বিএনপির অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবো।
বিএনপি সরকারকে ব্যবসায়ী সরকার মন্তব্য করেন কাদের বলেন, তারা সবাইকে ব্যবসায়ী ভাবে। কিন্তু আমরা ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসিনি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ড়ে দিয়েছে এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ সৃষ্টি করছে তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো কারণ নেই। বিএনপি সিন্ডিকেট লালন-পালন করেছে। যারা মজুদ করেছে তাদের বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
অর্থনীতির সঙ্কট আছে, কিন্তু সেটার জন্য সরকার দায়ি নয় মন্তব্য করেন তিনি বলেন, সরকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে দ্রব্যমূল্য রাখার চেষ্টা করছে। সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করে যাচ্ছেন। রমজানে যে আশঙ্কা, প্রধানমন্তী তা দূর করার চেষ্টা করছেন। রমজানে নিত্যপণ্যের অভাব হবে না।
মিউনিখ সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বরাত দিয়ে কাদের বলেন, সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অবস্থান, করণীয় বিষয়ে কথা বলেছেন।
সারা দুনিয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রণক্ষেত্র মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। সঙ্কটে কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। বাজারে ক্রেতা কম নাই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর বিদেশে অবৈধ অর্থ পাচার সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কোনো মন্ত্রী শুধু নয়, দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবে না। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
শেখ হাসিনাকে কোনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বন্ধু দেশ বন্ধু দেশের মত আছে, আমাদেরকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে না। পারস্পরিক সহযোগিতার অর্থ নিয়ন্ত্রণ নয়। এখন ডিপ্লোমেসি উইথ কমনসেন্স খুব জরুরি।
ভোরের পাতা/আরএস