শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক   হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বাড়ল   হেফাজতের বিক্ষোভ-সমাবেশ আজ   কিউএস এশিয়া র‌্যাঙ্কিংয়ে দেশ সেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম ঢাকায় এসেছেন   চিন্ময় ইস্যুতে ভারতে মোদি-জয়শঙ্কর বৈঠক   জাতীয় স্বার্থে একমত থাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ডা. স্বপ্নীল ও রাহিব রেজার পরিবারের মধ্যকার যোগাযোগটা কেমন ছিলো?
ভূঁইয়া আশিক রহমান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৮:১২ পিএম আপডেট: ২২.০২.২০২৪ ৮:৩৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

রাহিব রেজা-ল্যাবএইডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বত্রিশ বছর বয়স মাত্র। ফলে আমাদের কষ্ট লাগছে। খুব খারাপ লাগছে। কষ্ট লাগাটাই স্বাভাবিক। আজ যদি আমি মারা যাই, কিংবা আমার মতো কেউ মারা যায়- সেটা হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা বা জটিল কোনো রোগে, তাহলে কাছের মানুষ তো বটেই, কেউই মেনে নিতে প্রস্তুত থাকবে না। বিস্মিত হবে। কিন্তু মৃত্যু তো সব বিস্ময়ের ঊর্ধ্বে। আমাদের প্রতিনিয়তই বিস্মিত করে মারা যাচ্ছে আমাদের প্রিয়জন, স্বজন-সুজনেরা। কেউ কি কাউকে আটকাতে পারছি? পারছি না। ফলে মৃত্যুই আমাদের গন্তব্য। তার মানে কি কারও ভুলের মাসুলও আমাদের দিতে হবে? নিশ্চয়ই না। আবার কেউ ভুল না করলেও কি আমরা সেই মৃত্যু দায় তাকে চাপাতে পারবো? পারবো না। আমরা হয়তো অভিযোগ করতে পারবো, হতাশা থেকে আক্রমণ করে যুক্তি ছাড়া ভুলভাল বলতে পারবো, কিন্তু এতে কি এটা প্রমাণিত হবে- কেউ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী?

আমি চিকিৎসক নই। সাধারণ নাগরিক। চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিল এতোকিছু বুঝি না। তবে বিজ্ঞান বা যুক্তি-প্রমাণ তো আমরা বুঝি? রাহিবের মৃত্যুর জন্য ডা. স্বপ্নীলকে দায়ী করে অভিযোগ করছেন তার পরিবার। কী কী অভিযোগ করছেন? রোগীর রিপোর্ট না দেখে চিকিৎসক এন্ডোসকপি করেছেন? চিকিৎসক কী বলছেন? চিকিৎসক বলছেন, রোগীর পূর্বের কোনো অসুখের কোনো রিপোর্ট দেখানো হয়নি। অন্য কোনো অসুখ আছে কিনা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। রোগী সব তথ্য দেননি। বরং আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছেন। তবুও এন্ডোসকপি করার আগে যে টেস্ট করা দরকার ছিলো, সেগুলো করা হয়েছে। তাতে এন্ডোসকপি করা যাবে না- এমন কোনো রোগ ধরা পড়েনি। ফলে এন্ডোসকপি করতে কোনো বাধা ছিলো না। ২০ বছর চিকিৎসাসেবা করছি। রিপোর্ট না দেখে? পরিবার থেকে বলা হচ্ছে, গ্যাসের সমস্যা নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক বলছেন, ফ্যাটিলিভারের সমস্যার কথা বলেছেন রোগী।   

রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়েছে? চিকিৎসক বলছেন, রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। রোগীর সম্মতিক্রমে স্বল্পমাত্রার ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছিলো। ওষুধের নাম কী, সেটা রোগীর ফাইলে আছে। অভিযোগ রোগীকে চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে? চিকিৎসক বলছেন, এন্ডোসকপি ১ থেকে দেড় মিনিট লেগেছে। তারপর রোগী পর্যবেক্ষণে ছিলো। অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা সরাঞ্জামাদি ছিলো। তাৎক্ষণিক কোনো সমস্যা হয়নি। যখন থেকে রোগীর নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়, তখন থেকেই রোগীর প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্ট করা হয়েছে। সেখানে তার নানা ধরনের অসুখের খোঁজ মিলে। প্রতিমুহূর্ত রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সর্বক্ষণ চিকিৎসক ছিলেন। মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছিলো। রোগীর স্বজনেরাও ছিলেন মেডিকেল বোর্ডে। ছিলেন রোগীর পরিবারের আমন্ত্রিত চিকিৎসকও। সেখানে চিকিৎসকদের চেষ্টা, আন্তরিকতায় হ্যাপি ছিলেন তারা। 

পরিবারের পক্ষ থেকে আহ্বান ছিলো যেন সবটা দিয়ে চেষ্টা করা হয়। চিকিৎসক বলছেন, চিকিৎসাবিদ্যার সবটা দিয়েই চিকিৎসকেরা রাহিবের সুস্থতায় চেষ্টা করেছেন। পরিবার রোগীকে বিদেশ নিতে চেয়েছেন। চিকিৎসক বলছেন, সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবার পরে রোগীকে বিদেশ নেয়নি। কী কারণে তারা বিদেশে নেননি, তা অজানা। রাফসান দ ছোট-ভাই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার। রাহিব রেজা তার বন্ধু। রাফসানের পিতার সঙ্গেও যোগাযোগ ছিলো। কথা হয়েছে। তিনি আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। বিশ্বাস রেখেছেন। সর্বোচ্চ চেষ্টার কথা বলেছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছি। রাহিব রেজার স্লিপ অ্যাপনিয়া বা শ্বাসকষ্ট ছিলো। চিকিৎসক বলছেন, আমরা তথ্য চেয়েছি। রোগী প্রয়োজনীয় তথ্য দেননি। রোগীর পরিবার বা বন্ধু দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকেছেন? চিকিৎসক বলছেন, এ ধরনের কোনো কিছু হয়নি। রোগীর বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো। তথ্য আদানপ্রদান করা হয়েছে। যখন যে সহযোগিতা বা তথ্য চেয়েছেন তাদের দেওয়া হয়েছে। 

রাহিব রেজার এন্ডোসকপি করেছিলেন কোন চিকিৎসক? অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। দেশের অন্যতম সেরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপালোজি বিভাগের প্রধান। দেশবরেণ্য একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ন্যাসভ্যাকের অন্যতম আবিষ্কারক তিনি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিখ্যাত জার্নালে বহু গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে তার সুনাম আছে। লিভার চিকিৎসায় বাংলাদেশের বড় নাম হিসেবেই তারা জানানে। জাপান, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশে লিভারের উন্নত ও অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা তার হাত ধরেই এসেছে। নিয়মিত প্র্যাকটিস করছেন ২০ বছর ধরে। ল্যাবএইড হসপিটালেই। এখন যে রুমে তিনি বসে প্র্যাকটিস করেন, সেখানে বসেই প্রায় প্রতিদিন শত রোগীর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকেন। ৬০ হাজারের বেশি এন্ডোসকপি নিজে করেছেন। এতো অভিজ্ঞ, এতো খ্যাতি ও দায়িত্বশীল একজন মানুষ চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন, বিশ্বাসযোগ্য কি?

(লেখাটি ভূঁইয়া আশিক রহমান এর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া)



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]