শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষসহ নানা ঘটনায় প্রায়ই আলোচনায় আসা সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ধর্ষণের ঘটনায়।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে।
পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন।
তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের অন্তর্ভুক্ত তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুষার উপজেলা পরিষদে ঢুকে মাস্তানি করায় সরকারি কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সাদ্দাম হোসেন এবং শেখ ইনানকে বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে জানানোর পরও রহস্যজনক কারণে তারা নিরবতা পালন করছেন। এরি মধ্যে তুষার এএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে তিনমাসব্যাপী মেলার আয়োজন করেছ। যেখানে প্রশাসনের অনুমতি নেয়া হয়নি এবং উপজেলা পরিষদে হামলার মামলার আসামি হয়েও দিব্যি মেলা বসিয়ে জুয়া ও মাদকের রমরমা ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছে তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুষার। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নিতে বরাবরই অনীহা দেখাচ্ছেন সাদ্দাম ইনানসহ কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন। বিষয়টিও আওয়ামী লীগের সাধারণকে জানানোর পর তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে জড়ানোর খবর আসে।
সবশেষ চায়ের দোকানে বসা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সংঘর্ষ হয় বগিভিত্তিক সিএফসি ও সিক্সটিনাইন গ্রুপের মধ্যে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠনটির কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবনার কথা জানতে চাওয়া হয় ওবায়দুল কাদেরের কাছে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্যবস্থা হচ্ছে, নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করছি। দলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যত কঠোর হওয়া দরকার। সাদ্দাম- ইনানের কমিটি আমাদের হতাশ করেছে। প্রয়োজনে ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলনও হতে পারে।
নানা সময় দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকা কমিটিগুলো দিতে না পারার ব্যর্থতার বিষয়েও আওয়ামী লীগের নেতারা সাদ্দাম ইনানের কমিটির ওপর বিরক্ত বলে জানা গেছে। এমনকি যেসব ইউনিটে কমিটি দেয়া হয়েছে সেখানেও বিতর্কিতরা ঠাঁই পেয়েছেন। এছাড়া নানা সময়েও ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছে। নির্বাচনের কারণে এসব এতদিন আমলে নেয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সায়েম খান সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন