ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী ও তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত মিলিশিয়াদের ৮৫ লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইরানপন্থি ১৮ যোদ্ধা নিহতসহ অনেক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে।
শনিবার (৩ ফেরুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি ও আল-জাজিরা।
এতে বলা হয়, সিরিয়ায় হামলায় অন্তত ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এছাড়াও ইরানপন্থি দলগুলোর ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও ধ্বংস হয়েছে। হামলায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমানও ব্যবহার করা হয়েছে।
সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হওয়ার পর এই প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
প্রতিশোধমূলক হামলার পর বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘আমার নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হলো। আমাদের পছন্দমতো সময়ে ও জায়গায় এটি চলতে থাকবে।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশের ৮৫টি বেশি লক্ষ্যবস্তুতে তাদের সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে। একাধিক বিমান হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরপাল্লার বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানায় তারা।
রয়টার্স বলছে, প্রতিশোধমূলক হামলা ইরানের অভ্যন্তরে কোনো অবস্থানে করা হয়নি। তারপরও গাজায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের চার মাসের যুদ্ধের মধ্যে হওয়া এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, দেশটির মরুভূমি অঞ্চলে এবং সিরিয়া ও ইরাকি সীমান্তের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় ‘আমেরিকান আগ্রাসনের’ ফলে অনেক লোক নিহত এবং আহত হয়েছে।
সেন্টকম জানিয়েছে, বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
সিরিয়ার সূত্রগুলো এএফপি জানিয়েছে, দেইর এজর শহর থেকে ৬২ মাইল (১০০ কিলোমিটার) ইরাকি সীমান্তের কাছে আলবু কামালের কাছ পর্যন্ত বিস্তৃত পূর্ব সিরিয়ার বিশাল অংশে চলমান অভিযানে অস্ত্রের ডিপোসহ ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ইরাকে হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।