প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০:৫১ এএম | অনলাইন সংস্করণ
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর তীব্র সংঘাত চলার মাঝেই জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও এক দফায় ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করেছে মিয়ানমারের জান্তা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিনা রক্তপাতে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই সময় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত দেশটির নেত্রী অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত ও অবরুদ্ধ করা হয়।
ক্ষমতা দখলের পর দ্রুত দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেয় জান্তা। তবে বুধবার নতুন করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি মাধ্যমে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন আরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জান্তা বাহিনী বলেছে, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ত সুয়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।’’
প্রায় তিন বছর আগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক জান্তা। কিন্তু সেবার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। তারা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এ কারণে সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালায় জান্তা বাহিনী।
পরে দেশজুড়ে জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দেশটির সাধারণ জনতা ও বিদ্রোহীরা। এছাড়া অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোও আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। দেশটিতে সশস্ত্র প্রতিরোধ ঠেকাতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ কয়েক দফায় বৃদ্ধি করেছে সামরিক জান্তা।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাদের দাবি, এই সংবিধান এখনো কার্যকর আছে। ২০০৮ সালের সংবিধানে বলা আছে, জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
মিয়ানমারের স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের পর অভ্যুত্থানবিরোধী প্রায় ৪ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে জান্তা। তবে এত দমন-নিপীড়ন চালিয়েও সশস্ত্র প্রতিরোধ ঠেকানো যাচ্ছে না।
বিশেষ করে গত তিন মাসে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্য। রাখাইনে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তীব্র হামলার মুখে অনেক জায়গা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে সেনাবাহিনী।