শ্রমিকদের দিকে যে মনোযোগ এই সরকার দিয়েছে তা অন্য কোনো সময় ছিলনা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ যে কোনো সময়ের চেয়ে উন্নত হয়েছে। সংশোধিত শ্রম আইন আসছে সংসদ অধিবেশনে উঠবে এবং পাশও হবে।
বুধবার দুপুরে আইএলওতে দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, শ্রম পরিস্থিতি ও আইন নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শ্রম আইন করা হবে। কোনো কারখানায় ১০ ভাগ শ্রমিকের সম্মতি নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করার ধারা যুক্ত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের যে দাবি, বাংলাদেশের বাস্তবতায় তা করা হবে। মালিক ও শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনা করে এটা করা হবে।
তিনি জানান, সংশোধিত শ্রম আইনে যে কারখানায় তিন হাজরের বেশি শ্রমিক আছে সেখানে ১৫ ভাগ শ্রমিকের সম্মতি ও তিন হাজারের কম হলে ২০ ভাগ শ্রমিকের সম্মতির ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বসছে ৩০ জানুয়ারি। স্পিকার সভাপতিত্বে ওই দিন বিকাল তিনটায় এ অধিবেশন শুরু হবে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নতুন এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, তৈরি পোশাক খাতে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে অনানুষ্ঠানিক অন্য কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাড়ানো এবং সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে সুরক্ষার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশ।
এর আগে গত বছরের ছয় ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, শ্রম আইনে মুদ্রণজনিত ভুল থাকায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আইনটিতে সম্মতি না দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছেন।
মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার সময়ও আইনটিতে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু সংসদে পাশ হওয়ার পর টাইপের ভুলটি দেখা যায়, যোগ করেন আইনমন্ত্রী।
গত ২ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল–২০২৩’ পাশ হয় একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে। এরপর তা পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য।
কিন্তু ভুল থাকায় গত সোমবার তা পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠান রাষ্ট্রপতি।
মুদ্রণ ভুলের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এক জায়গায় শ্রমিকদের সঙ্গে যদি মালিকরা বেআইনি আচরণ করেন, তাহলে তাদের জন্য একটি সাজার কথা আইনের মধ্যে আছে। সেটি একটু মিসপ্লেস হয়ে গিয়েছিল। যেটি ২৯৪ এর এক হওয়ার কথা ছিল, সেটি সেরকম না হয়ে, অন্যরকম হয়েছে।
‘আইনটিতে মালিকদের কিছু আচরণ ব্যাখ্যা করে দেয়া আছে। বলা আছে, কোনো মালিক কোনো বেআইনি আচরণ শুরু করলে কিংবা চালিয়ে গেলে, অথবা তা এগিয়ে নেয়ার জন্য কোনো কাজ করলে, তিনি ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই সাজাটি ছিল পাঁচ হাজার টাকা, কিন্তু এটি ২০ হাজার টাকা করেছি।’
এখানেই ত্রুটিটি হয়ে গেছে মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, এই ত্রুটি যখন শ্রম মন্ত্রণালয় ধরতে পেরেছে, তখন এটি বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়। এখন রাষ্ট্রপতি এটিকে ফেরত দিয়েছেন।