প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে একজন কর্মীর মনোবল, দক্ষতা ও সার্বিক মানোন্নয়ন সম্ভব, যা মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।’
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন সমিতি (বিএসটিডি) ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উদযাপন করতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বিএসটিডির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের বর্তমান লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এ ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য ধার্য করা সবকটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা, ২১০০ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমাদের এসব পরিকল্পনার মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর হামলার কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, মিয়ানমারে গণহত্যা প্রসূত মানবিক বিপর্যয় ও প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখের ওপর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমাদের স্বাভাবিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। আমাদের সরকার বর্তমান ও ভবিষ্যতের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব, কাজের গুণগত মান ও কাজের গতি বাড়ানোর জন্য নানামুখী ও বাস্তবধর্মী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। আমাদের জনপ্রশাসনে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে প্রশিক্ষণ খাতের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও বেগবান করেছি। প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন করে দিচ্ছি। ক্যাডার অফিসারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করেছি। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে সেবাধর্মী, উন্নয়নবান্ধব ও আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের পরিসর বাড়ানোসহ নানাবিধ সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএসটিডি দীর্ঘ দিন মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণবিষয়ক বাস্তবধর্মী কর্মসূচি উদ্ভাবন, গবেষণা পরিচালনা, সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক উচ্চতর প্রশিক্ষণ আয়োজন করে আমাদের মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ জার্নাল ও নিউজ লেটার প্রকাশ করছে এবং প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিএসটিডি প্রশিক্ষণ পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, বিএসটিডি আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সার্বিক সহায়তা করবে। ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান থেকে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রী ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর: বাসস