সম্প্রতি দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শীতকালীন ঝড় ও তুষারপাতে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, এই আবহাওয়া আরও কিছুদিন ধরে চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রচন্ড ঠান্ডা ও শীতকালীন ঝড়ে প্রাণহানি বেড়ে ৮৯ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে কেবল টেনেসি অঙ্গরাজ্যেই মারা গেছেন কমপক্ষে ২৫ জন।
গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে তীব্র ঠান্ডা চলছে এবং এটি এ সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত চলতে থাকবে। এছাড়া ঝড়ের কারণে দেশটির বিশাল এলাকাজুড়ে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ব্যাপক শীতকালীন ঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯০ জনের আবহাওয়াজনিত মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে কেবল টেনেসিতে কমপক্ষে ২৫ জন এবং ওরেগনে মারা যাওয়া ১৬ জনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এই দুটি অঙ্গরাজ্যে গুরুতর বরফ ঝড়ের পরে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে।
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কয়েক হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন রয়ে গেছে। বরফের এই অবস্থা চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস-এর একটি সমীক্ষা অনুসারে, গত সপ্তাহে সারা দেশে মোট ৮৯টি আবহাওয়া সংক্রান্ত মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
টেনেসি এবং ওরেগন অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হলেও ইলিনয়, পেনসিলভানিয়া, মিসিসিপি, ওয়াশিংটন, কেনটাকি, উইসকনসিন, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং অন্য আরও স্থানে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
গত বুধবার ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে শক্তিশালী বাতাসের কারণে একটি বিদ্যুতের লাইন ভেঙে পড়ে এবং একটি গাড়িতে আঘাত করে। এতে গাড়িতে ভ্রমণরত তিনজন বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। গাড়িতে থাকা একটি শিশু অবশ্য ওই ঘটনায় বেঁচে যায়।
এছাড়া কেনটাকিতে পাঁচটি গাড়ি দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু এবং ইলিনয়ে চারজন নিহত হওয়াসহ অন্যান্য মৃত্যুর ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অনুসারে, সিয়াটলে মাত্র চার দিনের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছে। নিহতদের বেশিরভাগই গৃহহীন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিসিসিপিতে চালকদের ‘প্রয়োজন হলেই গাড়ি চালাতে’ এবং অঙ্গরাজ্যের রাস্তায় ‘কালো বরফ সম্পর্কে সচেতন’ হওয়ার জন্য সতর্ক হতে বলেছে আবহাওয়া কর্মকর্তারা। অঙ্গরাজ্যটির কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলমান পরিস্থিতিতে শীতকালীন ছুটি থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরে আসতে বিলম্ব করতে বলেছে।
এদিকে সম্ভাব্য ঝড়-সম্পর্কিত পানির ঘাটতি সম্পর্কে অনলাইনে গুজব ছড়ানো এবং সেই গুজবের জেরে বাসিন্দাদের তাদের বাথটাবে পানি সংরক্ষণ করতে প্ররোচিত করেছে কিনা তাও তদন্ত করছে মিসিসিপির কর্মকর্তারা। এই পদক্ষেপটি অঙ্গরাজ্যের রাজধানী জ্যাকসনের হাজার হাজার বাসিন্দার জন্য পানির চাপ সৃষ্টি করেছে।