নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক মহলে যারা নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান ছিল তারাও সন্তষ্ট। বিএনপি ভুল রাজনীতি করছে, দেশ বিরোধী রাজনীতি করছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম, আপনারা কি ধরনের নির্বাচন চান- উৎসবমুখর নাকি উত্তেজনামূলক নির্বাচন? আপনারা বলেছিলেন উৎসবমুখর। সে নির্বাচনটাই এবার হয়েছে। উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসলে তাদের সঙ্গে দেশবিরোধী অপরাধীরা থাকতো, স্বাধীনতা বিরোধীরা থাকতো, যুদ্ধ অপরাধীরা থাকতো। নির্বাচন হতো উত্তেজনাপূর্ণ। বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এত সুন্দর, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন এর আগে কখনো হয়নি। আন্তর্জাতিক মহল যারা নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান ছিল তারাও সন্তুষ্ট।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা দেখছেন জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ প্রতিনিয়ত, এই নির্বাচন ও সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয় বিএনপি ভুল রাজনীতি করেছে, দেশবিরোধী রাজনীতি করেছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের যে কাজগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলছে, সেই
কাজগুলো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং শেষ করা-এটা হচ্ছে মূল চ্যালেঞ্জ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনেক প্রজেক্ট আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে প্রজেক্ট সেটি হলো মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ। এরকম অসংখ্য প্রকল্প আছে। সেগুলোর শেষ করা আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যতগুলো প্রকল্প আছে সবগুলো শেষ করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের কথা বলেছেন। সেটাও আমরা সম্পন্ন করতে চাই।
তিনি বলেন, ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে নদী নালা খাল বিল এর উন্নয়ন করব। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী যে ইশতেহারের কথা বলেছেন- ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ আমরা সেই কর্মসংস্থানের উপর বিশেষ নজর দেব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তরুণ যুবকরা যেন কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবো। মন্ত্রণালয় থেকে অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি। আরো প্রকল্প আমাদের পাইপলাইনে আছে। সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করবো। মন্ত্রণালয়কে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে অনুপ্রেরণা যে সাহস দরকার সেটা নেয়ার জন্য আজ টুঙ্গিপাড়ায় এসেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে এসেছি। আমাদের সিনিয়র সচিবসহ প্রত্যেকটা সংস্থার প্রধানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এসেছেন। আমরা এখানে এসেছি আমাদের আদর্শের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাতে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এটুকুই শপথ নিবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের যে প্রত্যয় আমাদের যে অঙ্গীকার আমরা যেন সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি। সেই সাহস, সে অনুপ্রেরণা নেওয়ার জন্যই আজ টুঙ্গিপাড়ায় আসা।
প্রতিমন্ত্রী পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ায় অংশ নেন।
মিলাদ মাহফিলে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
বিকেলে প্রতিমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এ সময় ৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, মংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) অতিরিক্ত সচিব এম মতিউর রহমান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর জিয়াউল হক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামরুন নাহার, চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমির কমান্ডেন্ট (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ক্যাপ্টেন আই কে তৈমুর, বরিশাল মেরিন একাডেমীর কমান্ডেন্ট ক্যাপ্টেন এস এম আতিকুর রহমান, রংপুর মেরিন একাডেমীর কমান্ডেন্ট ক্যাপ্টেন মোঃ শফিকুল ইসলাম সরকার, সিলেট মেরিন একাডেমীর কমান্ডেন্ট নৌ প্রকৌশলী মোঃ হুমায়ুন কবির, পাবনা মেরিন একাডেমির কমান্ডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) ক্যাপ্টেন মো. তৌফিকুল ইসলাম, নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক সুমন বড়ুয়া, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট মাদারীপুর এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. শহীদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।