বিপিএলের দশম আসের নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল রংপুর রাইডার্স। এদিন ব্যাটিংয়ে সুবিধার করতে পারেননি সাকিব-সোহানরা। তবে অল্প রানের পুঁজিতেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে রংপুর। বিপরীতে সাকিবদের পাঁচ উইকেটে হারিয়ে জয় দিয়ে আসর শুরু করল তামিম-রিয়াদরা।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরু থেকেই চেপে ধরে মিরাজ-খালেদরা। তবে লড়াই করে ১৩৪ রানের লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। জবাব দিতে নেমে ৫ বল হাতে থাকতেই জয় তুলে নেয় বরিশাল।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইব্রাহিম জাদরান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি জাদরান। ১২ রানে আউট হন এই আফগান ব্যাটার। ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তামিমও।
এরপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। তবে পিচে থিতু হতে পারেনি মিরাজও। ১৮ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মুশফিকতে সঙ্গ দেন পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার শোয়েব মালিক।
কিন্তু ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে মুশফিককে (২৬) বোল্ড আউট করে বরিশালকে বিপাকে ফেলেন সাকিব। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি রংপুরের, শেষ পর্যন্ত শোয়েব মালিকের ১৭ রান এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ১১ বলে ১৯ রানের দুর্দান্ত ফিনিংসে পাঁচ বল এবং ৫ উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ফরচুন বরিশাল।
রংপুর রাইডার্সের হয়ে সাকিব আল হাসান ও হাসান মুরাদ দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও মোহাম্মদ নবী এক উইকেট নেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় রংপুর। ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ ইরফান। বাঁহাতি এই পেসারের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ব্রেন্ডন কিং।
পরের ওভারেই আবারও ধাক্কা খায় রংপুর। এবার সৈয়দ খালেদের অফ-স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন রনি তালুকদার। কিন্তু ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক টাইমিং না হওয়ায় টপ-এজ হয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন তিনি। মাত্র ৫ রানেই থেমে যায় এই ওপেনারের এবারের যাত্রা। এরপর সাকিবকেও ফেরান খালেদ। মাত্র ২ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
এরপর রাইডার্সদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন সোহান ও ওমরজাই। তবে এই জুটিও বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে দেননি দুনিথ ওয়াল্লালাগে। লঙ্কান এই স্পিনারের বল মিড-অফে খেলতে গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারানো রংপুরকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন শামীম পাটোয়ারী ও সোহান। এই দুই ব্যাটার চেষ্টা করলেও খুব বেশি সময় এই জুটি স্থায়ী হয়নি। শোয়েব মালিকের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বলে ব্যক্তিগত ২৩ রানে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রংপুর দলপতি। এরপর মিরাজে ঘূর্ণিতে ব্যক্তিগত ১০ রানেই ফেরেন মোহাম্মদ নবিও।
অন্যদিকে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করা শামীমকেও স্পিন ভেলকি দেখিয়েছেন মিরাজ। এই স্পিনারের অফ-স্ট্যাম্পের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন পাটোয়ারী। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে সোজা স্ট্যাম্পে আঘাত হেনেছে বল। এতে ৩৩ বলে ৩৪ রান থেমেছে তার ইনিংস।
ইনিংসের শেষ দিকে ক্যামিও এক ইনিংসে রংপুরকে পথ দেখান শেখ মেহেদী। তবে জাদরানের দারুণ এক ড্রাইভিং ক্যাচে তারও বিদায়ঘণ্টা বেজেছে। পরের বলেই ফেরেন হাসান মাহমুদ। এতে নির্ধারিত ২০ ওভারে শেষ পর্যন্ত ১৩৪ রানেই থেমেছে রংপুরের ইনিংস।