প্রকাশ: শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৪, ২:২৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জার্মানিতে অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব লাভের সময়সীমা কমিয়ে এনে নতুন আইনের অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। সেই সঙ্গে নতুন আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগও দেওয়া হয়েছে।
জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে গতকাল শুক্রবার নতুন আইনের পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। জার্মান সরকার মনে করছে, এই আইনের মাধ্যমে দেশটি দক্ষ কর্মীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে কর্মীসংকট লাঘব হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসসহ (এসপিডি) জোট সরকারের অংশীদার ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি) ও গ্রিন পার্টি আইনটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর কট্টর ডানপন্থী দল এএফডির সঙ্গে এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট (সিডিইউ) ও ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ)।
মোট ৬৩৯ ভোটের মধ্যে আইনটির পক্ষে পড়েছে ৩৮২ ভোট। বিপক্ষে পড়েছে ২৩৪টি। আর ২৩ আইনপ্রণেতা ভোটদানে বিরত ছিলেন।
কী পরিবর্তন আসছে
নতুন আইনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে পাঁচ বছর বসবাস করলেই বিদেশিরা জার্মান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আগে এ জন্য আট বছর সময় লাগত। অভিবাসীদের ইন্টিগ্রেশন বা জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্ত হতে ‘অসাধারণ যোগ্যতা’ অর্জন করলে তিন বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব অর্জনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
অভিবাসী যে দেশেরই হোন না কেন, নতুন আইনে তিনি দ্বৈত পাসপোর্ট রাখারও সুযোগ পাবেন। জার্মানিতে বর্তমানে এই সুবিধা শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্য সদস্যদেশ ও সুইজারল্যান্ডের নাগরিকেরা পেয়ে থাকেন। জার্মানি ইইউর প্রভাবশালী সদস্য।
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসারের মতে, এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে পারবে জার্মানি। তিনি বলেন, ‘দক্ষ কর্মী আকৃষ্ট করার প্রতিযোগিতায় আমাদের টিকে থাকতে হবে। এর অর্থ, বিশ্বের যোগ্য মানুষকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। যেমনটা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা করে থাকে। জার্মানির নাগরিকত্বের বিষয়টিও আবশ্যিকভাবে এর অংশ।’
এই আইনের ফলে কয়েক লাখ তুর্কি জনগোষ্ঠী জার্মানির নাগরিক ও ভোটার হতে পারবেন। তাঁদের অনেকের মা–বাবা কিংবা তারও আগের প্রজন্ম গত শতকের ১৯৫০ থেকে ১৯৭০-এর দশকে ‘অতিথি কর্মী’ হিসেবে জার্মানিতে এসেছিলেন।
তবে জার্মানির এখনকার সরকার অভিবাসনে ঢালাও কড়াকড়ির বিপক্ষে। এর পরিবর্তে অনুমতি বিহীনভাবে বসবাস করা অভিবাসী ও অপরাধীদের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জার্মান সরকার।
এছাড়া আবেদন নাকচ হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে গত বৃহস্পতিবার নতুন আইন করেছে জার্মান সরকার। নতুন এই আইনের ফলে আশ্রয় চেয়ে আবেদন বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে ২৮ দিন পর্যন্ত বন্দী রাখা যাবে। আগে এর মেয়াদ ছিল ১০ দিন।