কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে করা বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে খতমে কুরআন, মিলাদ, দোয়া মাহফিল এবং জুমার নামাজের পর বিশেষ দোয়ার মধ্যদিয়ে এ কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আশেকুর রহমান, কক্সবাজার পৌর যুবলীগের সাবেক সদস্য মাশেকুর রহমান, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ তাহের, কুতুবদিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমসহ উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা।
জানা যায়, কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল আহমেদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একজন খাটি মানুষ ছিলেন, তিনি শেষ বয়সে এসে জন্মভূমি দক্ষিণ ধুরুং এর মাটিতেই গড়ে তুলেছেন তার জীবনের লালিত স্বপ্নের আরাধ্য কর্ম-কাঠামো। নিজের পৈত্রিক জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে এ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স।
অনেক আগে এখানেই গড়া হয়েছিল গ্রামের প্রশাসনিক কেন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। করা হয়েছিলো যোগাযোগের মাধ্যম আকবর শাহ রোড। এই আকবর শাহ রোড-আজম রোড সংযোগস্থলকে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পুরো প্রাণকেন্দ্রের প্রবেশ মুখেই নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু গেইট।
এখানে রয়েছে পবিত্র আল্লাহর ঘর মসজিদ, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা নামে হেফজ খানা, শেখ হাসিনা বালিকা মাদরাসা, শেখ রাসেল বালক মাদরাসা, স্কুল, পুকুর ঘাট, ঈদগাহ ময়দানের মেহেরাব, জানাজার মুর্দার ঘর, আবাসিক অনাবাসিক ছাত্র ছাত্রীদের জন্য রান্নাঘর এবং খাওয়ার ঘর, ভদ্র মহোদয়দের জন্য বৈঠক খানা, জনস্বার্থে কবরস্থান গেইটসহ ইত্যাদি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল আহমেদ বলেন, আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি ছিলাম। মাধ্যমিক স্কুলে পড়াকালীন থেকে ধুরুং হাই স্কুলের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত জিএস, নাজির হাট কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের এজিএস এবং সাতকানিয়া কলেজ ছাত্রলীগের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত জিএস ছিলাম। ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলাম। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনগণকে সংগঠিত অপরাধে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আমার বিরুদ্ধে দেওয়া হয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, আলবদর শামস, রাজাকারদের সহযোগিতায় তারা আমার বাড়িতে আগুন এবং লুটপাট করা হয় তৎকালীন প্রায় ৫ লাখ টাকা ।
মুক্তিযোদ্ধা জালাল আহমেদে নীরবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সামাজিক কাজে নিঃস্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করে জনস্বার্থে বিলিয়ে দিচ্ছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্ট নিহতদের স্বরণে দক্ষিণ ধুরং এ অনেক কিছু নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছেন তিনি।