'পাবনা প্রেসক্লাবের জীবন সদস্য ও স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী ছিলেন আজীবন সংগ্রামী ও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আন্দোলনের প্রথম সারির যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান চির স্মরণীয়। সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমে ছিলেন অনন্য। তার জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার আছে নতুন প্রজন্মের। তার অভাব পূরণ হবার নয়।'
শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) রাতে স্যামসন এইচ চৌধুরীর ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পাবনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, 'একজন কীর্তিমান ও চিরঞ্জীব মানুষ স্যামসন এইচ চৌধুরী। তিনি সচেতন ও জ্ঞানী মানুষ ছিলেন। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। ৭৫ হাজার কর্মী তার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে আজ কাজ করছে। সকল ধর্মের প্রতি ও নারীদের প্রতি সম্মানবোধ ছিল স্যামসন এইচ চৌধূরীর। তার জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে সততা, নিষ্ঠা, আর অধ্যাবসায়। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার যে অবদান, তাতে তাঁর স্বাধীনতা পদক পাওয়া এখন সময়ের দাবি।'
স্মরণ সভায় স্যামসন এইচ চৌধূরীর ছেলে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই বাবার কাছ থেকে শিখেছি দেশপ্রেম। তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ওষুধ পাঠাতেন। সবাইকে নিয়ে একসাথে একান্নবর্তী হয়ে থাকা, সেটিও তাঁর কাছ থেকে শিখেছি, তাঁর আদর্শ ধরে রেখেছি। তাঁর জীবনে অনেককিছু পাওয়া ছিল বলেই আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। সময়ানুবর্তিতা তাঁর কাছে শিখেছি। এখনও সেভাবে চলি। তিনি কোথাও যেতে দ্বিধাবোধ করতেন না। নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করতেন। মানুষকে সম্মান করতেন তিনি। যে কারনে তিনি অনেক সম্মান পেয়েছেন। বাবা পাবনাকে খুব ভালবাসতেন। বাংলাদেশকে চিন্তা করতেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিন্তা করতেন।'
পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেলের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, পাবনা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম, পাবনা প্রেসক্লাব সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আবহায়ক শিবলী সাদিক, পাবনা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মির্জা আজাদ, সহ-সভাপতি শহীদুর রহমান শহীদ, সাবেক সম্পাদক উৎপল মির্জা প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য দেন, পাবনা প্রেসক্লাবের সহ-সম্পাদক সরোয়ার উল্লাস। স্মরণসভার শুরুতে প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯২৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার কাশীয়ানী থানার আড়কান্দি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ভারতে পড়াশুনা শেষ করে ১৯৫২ সালে পাবনা জেলার আতাইকুলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি মারা যান তিনি।