প্রকাশ: সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৬:৩৫ পিএম আপডেট: ২৫.১২.২০২৩ ৬:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের নদীকেন্দ্র চাঁদপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিরুল ইসলাম বলেছেন, এ বছর ইলিশ বেশি ডিম ছেড়েছে। তবে এটি নির্দিষ্ট করে বলা ঠিক হবে না। যদিও আনিছুর রহমান গবেষণায় সাড়ে ৫২ শতাংশ মা ইলিশের ডিম ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যে হারে মা ইলিশের ডিম ছাড়া বাড়ছে তাতে ইলিশ উৎপাদন প্রতি বছর বাড়বে। জেলে ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী জাটকা অভয়াশ্রম কর্মসূচি সফলভাবে শেষ করা গেলেই উৎপাদন বাড়বে।
ইলিশ গবেষকরা জানান, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে অমাবস্যা ও ভরা পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে মা ইলিশ সাগর মোহনা হয়ে ডিম ছাড়তে পদ্মা-মেঘনাসহ বড় নদীতে আসে। সমুদ্র সংযুক্ত ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার নদী অঞ্চল এবং চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ ছয়টি অভয়াশ্রমে মা ইলিশ ডিম ছাড়ে।
চাঁদপুরে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু কাউছার দিদার জানান, এ বছর মা ইলিশ রক্ষায় ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন এসব এলাকায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।
মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির ওই সময়ে এবং এর আগে ও পরের সাত দিন বিভিন্ন নদীতে গবেষণায় প্রচুর পরিমাণে ইলিশের লার্ভা ও জাটকা পেয়েছেন। এ বছর নদনদীতে অনুকূল পরিবেশ পাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে।
গবেষক ড. আনিছ বলেন, এ বছর মা ইলিশ চলাচলে তেমন বাধার মুখে পড়েনি। প্রশাসনের খবরদারি থাকায় নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা আগের তুলনায় কম মা ইলিশ শিকার করেছেন। এ ছাড়া শত শত ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন না থাকায় ইলিশের ডিম বা লার্ভা নষ্ট কম হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে পড়া অমাবস্যা ও পূর্ণিমা ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত ছিল।
তিনি জানান, একটি মা ইলিশ ১০ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়ে। এর মধ্যে যদি ১০ ভাগও টেকে, তাহলে আগামী মৌসুমে নতুন করে অন্তত ৪০ হাজার কোটি ইলিশ পাওয়া যাবে। জেলেরা বেপরোয়া না হলে এবং নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ ও অপরিকল্পিত বালু না তোলা হলে ইলিশ উৎপাদন বাড়তেই থাকবে।
এবার ইলিশের ডিম ছাড়ার পরিমাণ বেশি বলে জানিয়েছেন জেলেরাও।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে ইলিশ ধরায় এ বছর সাড়ে ৩ শতাধিক জেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে সাড়ে ২১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং প্রায় ২ টন ইলিশ। আগামী মার্চ-এপ্রিলে জাটকা মৌসুমে সঠিকভাবে সুরক্ষা দিতে পারলে ইলিশের উৎপাদন পৌনে ছয় লাখ টনে পৌঁছাতে পারে।