বিএনপি স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির মত গুপ্ত হত্যা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা- ১৩ আসনে নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি যেভাবে গুপ্ত হত্যায় মজে গিয়েছিল সেই পথেই বিএনপি-জামায়াত রয়েছে। উৎসবের নির্বাচনে বিএনপি বাধা সৃষ্টি করছে বলেও এ সময় অভিযোগ করেন তিনি।
আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের আগারগাঁও, তালতলা ও শ্যামলী এলাকার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার গণসংযোগ শুরু করার আগে গণমাধ্যমে এমন অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে তালতলার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালতলার সরকারি কলোনির শতদল কমপ্লেক্স কোয়ার্টারের সামনে থেকে ৬ষ্ট দিনের প্রচারণা শুরু করেন নৌকার এ প্রার্থী।
নানক শনিবার শেরে বাংলা নগরের ২৮ নং ওয়ার্ড- আগারগাঁও তালতলার সরকারি কলোনির শতদল কমপ্লেক্স কোয়ার্টারের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এ সময় নানকের বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সমর্থক ওই গণসংযোগে অংশ নেন। নৌকা নৌকা স্লোগান মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। একটি খোলা জিপে নানক জনসাধারণের উদ্দেশ্যে অভিবাদন জানান। পরে শতদল কমপ্লেক্স থেকে শোভাযাত্রা সহকারে পশ্চিম আগারগাঁও ঈদগাঁ মাঠ এলাকায় যান তিনি। সেখানে এলাকাবাসী ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় আওয়ামী লীগের এ প্রার্থীকে। পরে সেখানে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রচারণা চালান নানক। পরে পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালান তিনি। সেখান থেকে উত্তর শ্যামলী এলাকায় গণসংযোগ চালাল তিনি।
এর আগে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালতলার সরকারি কলোনির শতদল কমপ্লেক্স কোয়ার্টারের সামনে নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন নানক। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার একটি আসনে প্রচারাভিযানে এসে দেখছি নির্বাচনে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে এলাকাটিতে। এই নির্বাচনী আসনে ২০০৮ সাল থেকে আমি দশ বছর জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলাম। এই এলাকাটি মাদকের স্বর্গরাজ্য ও সন্ত্রাসপূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়া এলাকা ছিল। এলাকায় পানির সংকট, জলাবদ্ধতা ও সুয়ারেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। এখানে বিএনপি বস্তি নামে একটি মাদকের পাইকারি বাজার ছিল। এলাকাটিতে এমপি নির্বাচিত হবার পর আমি মাদক ও সন্ত্রাস সমূলে উৎপাটন করেছি। এলাকাটির পানির সংকট সমস্যার সমাধানসহ, মৌলিক সমস্যার সমাধান, মুখ থুবড়ে পড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাথা উচু করে দাঁড় করিয়েছি। এই এলাকার আস্থার ঠিকানা, বিশ্বাসের জায়গা আমি। সেই আস্থা, বিশ্বাসের জায়গা থেকে মানুষ আমার কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি চায় না। মানুষ জানে এই এলাকার উন্নয়নে আমি সর্বাত্মক নিজেকে নিয়োগ করবো।
বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন কিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি যে গুপ্ত হত্যায় মজে গিয়েছিল সেই পথেই বিএনপি-জামায়াত গিয়েছে। মানুষ যখন নির্বাচনমুখী, তখন তারা নির্বাচনের বিপক্ষ শক্তি হয়ে দাঁড়িয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন-নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
নানক বলেন, আগামী ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে আমার নির্বাচনী এলাকাসহ সারা দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। এই ভোট উৎসবে দেশের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এই উৎসবে মাতোয়ারা যখন দেশের মানুষ তখন বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়, দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে চায়।
শেরে বাংলা নগর এলাকা কেন্দ্রীক নতুন কোন পরিকল্পনা আছে কীনা জানতে চাইলে তিনি বলেন বলেন, এই এলাকা সেকেন্ড ক্যাপিটাল খ্যাত বর্ধিষ্ণু এলাকা। এলাকাটিকে আমি তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করেছি। এলাকাটিতে আগে কোনো রাস্তাঘাট ছিল না। এখনও কমিউনিটি সেন্টারসহ বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যাগুলি আমি সমাধান করবো ইনশাল্লাহ।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলসহ শেরে বাংলা নগর থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই গণসংযোগে অংশ নেন।