বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মিথ্যাচারকে ‘নরকের কীটের চেয়েও জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, (রেলে আগুন দিয়ে) যেভাবে চারজনকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, সেটার চেয়েও আরও বেশি জঘন্য, কুৎসিত, কদাকার এবং সেই সন্ত্রাসের চেয়েও আরও নারকীয়, বীভৎস হচ্ছে রিজভী সাহেবদের মিথ্যাচার।
তিনি বলেন, রিজভী সাহেব সম্পর্কে আমি এ শব্দগুলো ব্যবহার করতে চাই না। কিন্তু তার যে বক্তব্য, সেটির পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, তিনি নরকের কীটের চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার মিথ্যাচারে। যারা এই সমস্ত ঘটনা ঘটিয়ে এবং ঘটনার নির্দেশ দিয়ে আবার সেগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা করে, তারাও যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের মতো অপরাধী। জনগণের দাবি উঠেছে, এই জঘন্য, কুৎসিত কদাকার, মিথ্যাচার যারা করছে, নারকীয় কীটের মতো আচরণ করছে, কথা বলছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। শুধু আগুন সন্ত্রাসী না, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত বলে দাবি করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত আপনারা জানেন, গত ২৮ তারিখ (২৮ অক্টোবর) থেকে কীভাবে বিএনপি নতুনভাবে বাংলাদেশে আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে। এগুলো মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তারা যেটি শুরু করেছে... গাড়ি-ঘোড়াতে আগুন দেওয়া আছেই। ২০১৩-১৪-১৫ সালে গাড়িতে আগুন দিয়ে বহু মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এ পর্যায়েও গাড়িতে আগুন দিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, সবশেষ গত পরশুদিন জঘন্য, নারকীয়ভাবে যেভাবে তারা চলন্ত ট্রেনে আগুন দিয়েছে, সেই আগুনে চারজন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। একজন মা তার সন্তানসহ মৃত্যুবরণ করেছেন। রাজনীতির নামে এ ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড আমরা চিন্তাও করতে পারি না। ২০১৩-১৪-১৫ সালে তারা যেভাবে করেছিল, এখনো একই কায়দায় সেটি তারা শুরু করেছে। এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। সরকার সব সময় দেশের শান্তি-স্থিতি বজায় রাখতে চায়। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে সব সময় প্রতিহত করতে চায়।
নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে এর দায় সরকারের ওপর পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। এখন সরকারের সমস্ত প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত রয়েছে। এখন মাঠ প্রশাসন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের হাতে। নির্বাচন আয়োজক সংস্থা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দর করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
ভোট বর্জন করে বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটার উপস্থিতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি হবে। এরই মধ্যে যে পরিমাণ উৎসাহ-উদ্দীপনা গ্রামে-গঞ্জে তৈরি হয়েছে। প্রতিটি আসনে যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে, প্রতিটি আসনে গড়ে সাতজনের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী। সেজন্য নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যে যত কথাই বলুক, যত চেষ্টাই নির্বাচন বিরোধীরা করুক, ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি হবে এতে সন্দেহ নেই। ভোটার উপস্থিতি অটোমেটিক্যালি হবে, এজন্য বাড়তি কোন প্রচেষ্টার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনের ডাকের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কর্মীরা তাদের নেতাদের সহযোগিতা করছে না। এটা ওদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।