রাজশাহীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে বিশাল বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হয়। বিজয় শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
বিজয় শোভাযাত্রার সম্মুখে ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ছবি। এরপরে বড় আকৃতির জাতীয় পতাকা ও আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা ও লাল-সবুজ বেলুন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান প্রচার করা হয়। শোভাযাত্রায় দেশের ও রাজশাহীর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়।
বিজয় শোভাযাত্রা শেষে সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচন আসলে যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চায়, নির্বাচনে জনগণের রায়ের মুখোমুখী হয়ে ভয় পায়, সেই বিএনপি-জামায়াত আবারো ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ২০১৪/২০১৮ সালের মতো এবারো ষড়যন্ত্র করছে, আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। লন্ডনে বসে তারেক জিয়া যেভাবে পুতুলের মতো নাচাচ্ছে দেশে বসে মির্জা ফখরুল গংরা সেভাবে নাচছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে দেশের পরিস্থিতি ঘোলা করার, দেশকে অচল করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের অপচেষ্টা কোনদিন সফল হবে না। আমরা সফল হতে দেবো না।
তিনি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ কেন আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক লগাতে পারলো? এই পরিস্থিতি কে ডেকে এনেছে? মীর জাফরের মতো বিএনপি এই পরিস্থিতি ডেকে নিয়ে এসেছে। এতে আমরা বিরক্ত হয়েছি। আমরা দেখেছি, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে মার্কিন রাষ্টদূত পিটার হাস নানা জায়গায় গেছে, নানা বক্তৃতা দিয়েছে। এখন দেখেন এর নাম শেখ হাসিনার মার। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলো। শেখ হাসিনা নির্বাচনে গেলেন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে গেল। এখন কিন্তু পিটার হাস আর কোন কথা বলছেন না, চুপ করে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি বোয়িং বিমান বাংলাদেশ কিনবে কিনা, সেটি নিয়ে তিনি ব্যস্ত আছেন। তাই থাকেন। আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।
রাসিক মেয়র আরো বলেন, নৌকা মানে উন্নয়ন, নৌকা মানেই মানুষের কল্যান। তাই আগামী নির্বাচনে জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন। আর দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি কখনো মানুষের কল্যান চায়নি, আগামীতেও চাইবে না। কথায় আছে চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। তাই বিএনপিকে ধর্মের কাহিনী শুনিয়ে লাভ নাই। যারা আগুন সন্ত্রাস করবে, তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীর উন্নয়ন সারাদেশে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে আরো উন্নয়ন করা হবে। আমি আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছিলাম, কর্মের ক্ষেত্র তৈরি করে দেবো। আমি কিন্তু সেটি ভুলি নাই। সংসদ নির্বাচনের পরে কর্মের ব্যাপারে একটার পর একটা ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল এঁর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু এঁর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সদস্য ডা: আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, নগর শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আকতার আলী, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।