শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
যে ৫ কারণে দোয়া কবুল হয় না!
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৬:০৩ এএম | অনলাইন সংস্করণ

দোয়া মুমিনদের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। এমনকি দোয়ার ফলে ভাগ্যও ঘুরে যায়। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’ (সূরা মুমিন, আয়াত ৬০।) আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি।

অনেক মানুষ আছেন, আল্লাহর কাছে বারবার দোয়া করার পরও প্রত্যাশিত বিষয় না পেলে— দোয়া করা ছেড়ে দেন। হতাশ হয়ে অধৈর্য হয়ে পড়েন। 

বিভিন্ন কারণে আমাদের দোয়া কবুল হয় না। কিন্তু কেন আমাদের দোয়া কবুল হয় না— সে কারণগুলো আমরা জানি না। জেনে রাখার প্রয়োজনও মনে করি না। তাই আসুন, সেসব কারণ জেনে নেই।

এক. পানাহার ও পোশাক হালাল না হওয়া
হারাম খাওয়া ও হারাম উপার্জনের কারণে মানুষের দোয়া কবুল হয় না। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ পবিত্র; তিনি কেবল পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করেন।… তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন— দীর্ঘ সফরের ফলে যার চুল উসকোখুসকো, চেহারা ধুলোবালিমাখা। সে হাত দুটো আকাশের দিকে উঠিয়ে বলছে, ‘হে আমার রব! হে আমার রব!’, কিন্তু তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম আর তার পরিপুষ্টি হয়েছে হারাম দিয়ে; (এমতাবস্থায়) কীভাবে তার দোয়ায় সাড়া দেওয়া হবে?’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০১৫)

রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘মানুষের ওপর এমন এক যুগ অবশ্যই আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে কিভাবে সে সম্পদ অর্জন করল, হালাল উপায়ে, নাকি হারাম উপায়ে!’ (বুখারি, হাদিস : ২০৮৩)

অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না।’ (মুসলিম, হাদিস : ২২৩৬)

তাই দোয়া কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই হালাল ভক্ষণ করতে হবে। হালাল উপায়ে উপার্জন করতে হবে। জেনে রাখা উচিত যে, সফরে দোয়া কবুল হয়, হাত উঠিয়ে দোয়া করলে কবুল হয় এবং নিজেকে হীনজ্ঞান করে আল্লাহকে কায়মনো বাক্যে ডাকলেও দোয়া কবুল হয়; কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়— এতগুলো শর্ত লোকটি পূরণ করার পরও তার দোয়া কবুল হচ্ছে না। আর তা কেবল হারাম খাবার, পানীয় ও পোশাকের জন্য। (ইবনু রজব হাম্বলি, জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম)

দুই. দোয়ায় ইখলাস ও নিষ্ঠাহীনতা
মহান আল্লাহর দরবারে ইখলাসের সঙ্গে দোয়া করতে হয়। পরিপূর্ণ ইখলাস না থাকলে সে দোয়া বিফলে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, দোয়াও একটি ইবাদত। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭৯)

ইবাদত করতে হয় একমাত্র আল্লাহর জন্য। ইখলাসহীন ইবাদত মহান আল্লাহর কাছে মূল্যহীন। তাইতো পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করার আদেশ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাদের শুধু এ নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল যে তারা যেন আল্লাহর ইবাদত করে তাঁরই জন্য দ্বিনকে একনিষ্ঠ করে এবং নামাজ কায়েম করে ও জাকাত প্রদান করে। আর এটাই সঠিক দ্বিন।’ (সুরা বায়্যিনাহ, আয়াত : ০৫)

তিন. গুনাহ করা ও রক্তের বন্ধন ছিন্ন করার দোয়া
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি বড় ধরনের পাপ (অপরাধ)। এই পাপের শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গাতেই ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মুসলিম দোয়া করার সময় কোনো গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দোয়া না করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে এ তিনটির কোনো একটি দান করেন।

(১) হয়তো তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ দুনিয়ায় দান করেন। (২) অথবা তা তার পরকালের জন্য জমা রাখেন। (৩) অথবা তার কোনো অকল্যাণ বা বিপদাপদ তার থেকে দূরে করে দেন।

সহাবিরা বলেন, তাহলে তো আমরা অনেক বেশি লাভ করব। তিনি বলেন, আল্লাহ এর চেয়েও বেশি দেন। (আত-তারগিব, হাদিস : ১৬৩৩)

চার. গুনাহে অবিচলত থাকা
দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো, গুনাহ ত্যাগ করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা। অতএব, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য গুনাহ ত্যাগ করে মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা উচিত। কারণ যারা নিজেকে বদলায় না, মহান আল্লাহও তাদের বদলান না।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে। আর কোনো সম্প্রদায়ের জন্য যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন, তবে তা রদ হওয়ার নয়। এবং তিনি ছাড়া কোনো অভিভাবক নেই। (সুরা রাদ, আয়াত : ১১)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দার দোয়া সর্বদা গৃহীত হয় যদি না সে অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য দোয়া করে এবং দোয়ায় তাড়াহুড়া করে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৮২৯)

পাঁচ. দোয়ায় অমনোযোগী হওয়া
দোয়ায় মনোযোগ না থাকলেও সে দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কবুল হওয়ার পূর্ণ আস্থা নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো, তোমরা জেনে রাখো যে আল্লাহ নিশ্চয়ই অমনোযোগী ও অসাড় মনের দোয়া কবুল করেন না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৯)


মহান আল্লাহ আমাদের সবার ত্রুটিবিচ্যুতি ক্ষমা করুন। সবাইকে দোয়া কবুলে প্রতিবন্ধক অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে সঠিকভাবে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]