শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
মহামান্যের শুভ জন্মদিন শুভ হোক পথচলা
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: রোববার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৯:২২ পিএম আপডেট: ১১.১২.২০২৩ ১:১৯ এএম | অনলাইন সংস্করণ

আর্দশ, একাগ্রতা, সততা, নিষ্ঠা, শ্রম, বলিষ্ঠতা, মেধা ও শৃঙ্খলা একজন মানুষকে যে কত উপরে নিয়ে যেতে পারে তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত দেশের ২২তম মহামান্য রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন। ১০ ডিসেম্বর ছিল তাঁর ৭৩তম জন্মদিন। মহামান্যের শুভ জন্মদিনে একটাই কামনা, শুভ হোক আপনার আগামীর পথচলা।

ছাত্ররাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, আইন পেশা, বিচারকের দায়িত্ব, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকালে পৌঢ় খাওয়া এই মানুষটির দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতায় দেশকে ক্রমেই আরো সমৃদ্ধ করছে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মহামান্য রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং সর্বশেষ কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য হন। 

সার্টিফিকেট নাম মো. সাহাবুদ্দিন হলেও তার ডাক নাম চুপ্পু। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মানুষজনের কাছে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নামেই পরিচিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর সর্বশেষ তার লেখা ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ বইটি প্রকাশ হয়। 

মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরে জুবিলি ট্যাঙ্ক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শরফুদ্দিন আনসারী, মা খায়রুন্নেসা। রাধানগর মজুমদার একাডেমি থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২ সালে) বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি পাবনা শহিদ আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র তিনিই উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। 

তিনি ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭০ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সত্তর দশকে সাহাবুদ্দিন রাজপথে স্বাধিকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। ছাত্র-যুবদের অধিকার আদায়ে সবসময় ছিলেন সোচ্চার। ১৯৭২ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন সাহাবুদ্দিন।

কলেজ জীবনে প্রবেশের আগেই ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পাবনায় তার সাক্ষাৎ করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর এডওয়ার্ড কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক, অবিভক্ত পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি থেকে ছয় বছর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি। ছাত্রলীগের সক্রিয় কাজের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান।

১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। কারামুক্তির পর পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি।

পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) পরীক্ষা দিয়ে বিচারক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুইবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি। 

বিচারালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন শেষে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে ২০০৬ সালে অবসরে যান মো. সাহাবুদ্দিন। এরমধ্যে শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান পদেও তিনি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তখনকার বিচারক সাহাবুদ্দিন। বিচারক জীবনের ইতি টানার পর আবারও আইন পেশায় ফেরেন তিনি। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।

২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুইবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন সাহাবুদ্দিন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। সে সময়ের ‘হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের’ মতো ঘটনার পরবর্তীতে সরকার ক্ষমতায় গিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করে আওয়ামী লীগ। ওই কমিশনের প্রধান ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পেশাগত জীবনে প্রথম দিকে সাংবাদিকতাও করেছেন সাহাবুদ্দিন। তিনি পাবনা প্রেসক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য। বিচার বিভাগে যোগ দেওয়ার আগে ১৯৮০ থেকে দুই বছর দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতা করেন। পাবনা প্রেস ক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরিতেও সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া মহামান্য রাষ্ট্রপতি দুদকের কমিশনার হিসাবে অবসর গ্রহণের পরদিন ভোরের পাতার প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দীর্ঘদিন আমাদের প্রতিষ্ঠানকে দেখবাল করেছেন। তাঁর প্রখর মেধা ও মনন দিয়ে তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন নিয়মিত। আমরা আমৃত্যু তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলের বাবা। স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের যুগ্মসচিব হিসেবে ২০০৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পরিচালক হিসেবে কর্মরত। 

মহামান্য রাষ্ট্রপতি দম্পতির একমাত্র সন্তান আরশাদ আদনান বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য প্রযোজক। সাহাবুদ্দিন এবং রেবেকার দুই জমজ নাতি তাহসিন মো. আদনান ও তাহমিদ মো. আদনান এ-লেভেলে অধ্যয়নরত।

মহামান্যের শুভ জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসাবে প্রাণভরে দোয়া কামনা করছি আপনার জন্য। শুভ হোক আপনার আগামীর পথচলা। আপনি শক্তিমান হয়ে উঠুন। সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা দিয়ে দেশকে আরো উন্নত ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা আজকের দিনে।

মুজিব চেতনাকে সার্বজনীনভাবে ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী হোক আপনার ভূমিকা। আপনার হাত ধরে সকল প্রতিবন্ধকতা ছিন্নভিন্ন হয়ে উদিত হোক আগামীর আলোকিত ভোর। আগামীর দিন হোক আপনার, শুধুই আপনার। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক:
সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক ভোরের পাতা, দ্য পিপলস টাইম
সহ-সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ
সাবেক পরিচালক, এফবিসিসিআই
চেয়ারপারসন, ভোরের পাতা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]