ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায় মাত্র ২৫ দিন আগে যোগদান করা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেনকে বদলি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তাকে বদলি করা হয়েছে একই জেলার সালথা থানায়।
গত ১২ নভেম্বর আলফাডাঙ্গা থানায় কর্মকর্তা ওসির দায়িত্ব নিয়ে আসা হাবিল হোসেন ফরিদপুর-১ আসনে (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালী) আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী আবদুর রহমানের আত্মীয়।
ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর আত্মীয় ব্যক্তি আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হওয়ায় তার কাছ থেকে নিরপেক্ষ আচরণ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
ওসি কোনো প্রার্থীর আত্মীয়—অভিযোগ পেলে ওসিকে বদলি করা হবে বলেও সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের আদেশে যোগদানের ২৫ দিনের মাথায় আলফাডাঙ্গা থানা ছাড়তে হচ্ছে ওসি হাবিল হোসেনকে। বৃহস্পতিবার আলফাডাঙ্গা ছাড়াও ফরিদপুরের আরও সাত থানার ওসিকেও বদলি করা হয়।
সবমিলিয়ে এদিন সারাদেশের ৩৩৮টি থানার ওসিকে বদলি করা হয়েছে বলে পুলিশ সদরদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ফরিদপুরের মধ্যে ভাঙ্গা থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলামকে নগরকান্দা থানায়; চরভদ্রাসন থানার ওসি মো. সেলিম রেজাকে আলফাডাঙ্গা থানায়; কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল (নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক) ভাঙ্গা থানায়; সালথা থানার ওসি মো. শেখ সাদিককে বোয়ালমারী থানায়; নগরকান্দা থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেনকে মধুখালী থানায়; মধুখালী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলামকে কোতোয়ালি থানায় এবং বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাবকে চরভদ্রাসান থানায় পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, ওসি হাবিল হোসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানের বেয়াই সম্পর্কিত। হাবিলের ভাতিজার সঙ্গে আবদুর রহমানের ভাতিজির বিয়ে হয়েছে।
ওসি হাবিল আলফাডাঙ্গায় যোগদানের পর থেকেই ভোটের মাঠে তার আচরণ নিয়ে অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনকালীন সময়ে তার কাছ থেকে নিরপেক্ষ আচরণ পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন ছিল অন্য প্রার্থীদের।
সেসময় ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ওসির সঙ্গে প্রার্থীদের পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানায় নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার ওসি থাকাকালীন হাবিল হোসেন নিজেই ‘আদালত’ বসিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। যা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এরপর তিনি বিভাগীয় শাস্তির মুখে পড়েন এ বিষয়টি নিয়ে।
সেসময় ওসি হাবিলের কর্মকাণ্ড নিয়ে করা এক রিটের শুনানিতে আদালত বলেছিলেন, ‘ওসিরা যেখানে-সেখানে কোর্ট বসান। রাতে কোর্ট বসান। তারা নিজেরা বিচার বসান কীভাবে? এত সাহস তারা কোথায় পান?’
###