প্রকাশ: সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩, ৯:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জবরদস্তিমূলক জমি দখল, হত্যাচেষ্টা, বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের দুই মামলায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে আগাম জামিন দেননি হাই কোর্ট।
সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রফিককে জামিন না দিয়ে তার আবেদন ডিলিট করার নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ সাইফুদ্দিন খালেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জমি দখল, হত্যা চেষ্টা ও লুটপাটের অভিযোগে করা দুই মামলায় দুটি আবেদনে ১৮ জন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত রফিকুল ইসলামসহ তিন জনের আবেদন ডিলিট করে বাকিদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন।
এর আগে ১৯ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রফিককে প্রধান আসামি করে পৃথক দুই মামলায় প্রায় ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটি করেন ভুক্তভোগী আলী আজগর ভূঁইয়া ও মো. মামুন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন জানান, তাদের বাড়ির আশপাশের অনেক নিরীহ মানুষের জমি সন্ত্রাসী রফিকুল ইসলাম তার বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে দখল করে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় আসামিরা দলবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে তাদের পাঁচ ভাইয়ের মালিকানাধীন ৯৫ শতাংশ জমি রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে বলেন। অন্যথায় বাড়িঘর ভেঙে ফেলা ও গুলি করে পাঁচ ভাই ও মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। ১৯ অক্টোবর সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জন নিয়ে বাড়িতে এসে বাদীর মাকে দুই দিনের মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি দিয়ে যান। সর্বশেষ ২১ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে আসামিরা বুলডোজার, হাতুড়ি, শাবলসহ বিভিন্ন দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেন এবং গাভী, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, টিভি, ফ্রিজ, আলমারিসহ ঘরের প্রায় ৬৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় তিন তলা পাকা বাড়ি। কেটে ফেলে ৫০টি বড় গাছ। যাওয়ার সময় ২ নম্বর আসামি পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দ্রুত জমিজমা রেজিস্ট্রি করে না দিলে দেখামাত্র গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়।
অন্য মামলার বাদী আজগর আলী ভূঁইয়া জানান, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে নাওড়া মৌজায় বাদী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৫ বিঘা জমি রফিকুল ও মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। ১৮ নভেম্বর আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায় এবং গরু-ছাগল, আসবাবপত্র, নগদ টাকা, টিভি, ফ্রিজ ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১২ লাখ ৭৯ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যান। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলে বাদীর এক তলা বাড়িটি, যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা। ভাঙচুরের সময় আসামিরা বাদীর বৃদ্ধ বাবার গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে রাখে এবং দ্রুত জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে না দিলে সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।