একাধিক মামলার আসামী শিবির ক্যাডার হাসানের নেতৃত্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জারিকারকের জমি দখল
কমান্ড স্টাইলে সসস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গাছ কেটে ইট, বালি, খোয়া ও সিমেন্ট মাটি দিয়ে ঢালায় করে রাতা রাতি জমি দখল নিয়েছে হাসানুর রহমান হাসান ওরফে মিনিস্টার হাসান নামে এক দূর্ধষ শিবির ক্যাডার। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক, হোটেলে নারী কেলেঙ্কারী, নাশকতাসহ সাতক্ষীরা সদর থানা, পাবনা সদর থানা ও পাটকেলঘাটা থানায় ৯ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে।
হাসানুর রহমান হাসান সাবেক সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ছাত্র-শিবিরের সাধারণ সম্পাদক।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসানের নেতৃত্বে ৫/৬টা মোটর সাইকেলযোগে একদল সন্ত্রাসী সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জারিকারক মোঃ আলমঙ্গীর কবিরের পাটকেলঘাটা থানার তৈইলকূপী গ্রামের বাড়ীর পৈত্রিক জমিতে মহাড়া দিয়ে বিভিন্ন গাছ-গাচাছি কেটে ফেলে।
পরিবারের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে হত্যার হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়। এঘটনায় ন্যাশনাল সার্ভিস নাম্বর ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে তৈইলকুপি গ্রামের আরশাদ গাজীর ছেলে খায়রুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে শিবীর নেতা হাসান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে। প্রত্যাক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে পুলিশ চলে আসার পরপরি রাত ৯টা থেকে গভীররাত পর্যন্ত লোকজন ও মিস্ত্রি দিয়ে ইট, বালি, খোয়া ও সিমেন্ট মাটি মিশিয়ে ওই জমি ঢালায় করে জবর দখলে নেয় সে।
এদিকে ঘটনার সময় তাৎক্ষনিক জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জারিকারক মোঃ আলমঙ্গীর কবির ও তার ছোট ভাইয়ের শ্যালক পেস্টি বেঙ্গল লিঃ কোম্পানির সিনিয়র সেলস্ রিপ্রেজেন্টটিভ মোঃ সাগর হোসেন রবিবার ঘটনার রাতেই সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের নিকট ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।
অভিযোগ করে বলেন, পাটকেলঘাটা থানার তৈইলকূপী গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে হাসানুর রহমান হাসান ওরফে মিনিস্টার হাসান একজন দূর্ধষ সন্ত্রাসী ও শিবির ক্যাডার। সে ও তার বড় ভাই মিজানুর রহমান ও ভাতিজা মনতাছুরের নেতৃত্বে রাত সাড়ে ৮ টার সময় ৫ থেকে ৬টি মটরসাইকেল যোগে ১২ থেকে ১৩/১৪ জনের এক দল সসস্ত্র সন্তাসী মহাড়া দিয়ে তাদের বাড়ীর পাশ্ববর্তী আধা শতক একটি জমির মেহগনি গাছ ও জমির বেড়া ভাংচুর করে গাছ কেটে জমি দখল নিয়েছে। ঘটনার সময় ৯৯৯ নাম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে খায়রুল নামে একজনকে আটক করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে মিস্ত্রি দিয়ে ওই জমি পাকা ঢালায় করে দখলে নিয়ে নেয়। পরে তার পিতা মোঃ লিয়াকাত গাজী পাটকেলঘাটা থানায় গিয়ে বার বার পুলিশের দারস্ত হন। এক পর্যায়ে হাসান জমি দখল নিয়ে পাকা ঢালায় করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরি রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছান।
হাসানের বিরুদ্ধে মাদক, হোটেলে নারী কেলেঙ্কারী, নাশকতাসহ সাতক্ষীরা সদর থানা, পাবনা সদর থানা ও পাটকেলঘাটা থানায় কমপক্ষে ৯ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার মামলা নম্বর-৫,( ৩ এপ্রিল-২০২৩), ৩৩ (১৯ জানুয়ারি-২০১৮), পাটকেলঘাটা থানার মামলা-৩,(৮ ডিসেম্বর’২০২২) পাবনাসদর থানার মামলা নং-৩৯/২০৪ (১৭ মার্চ-২০২২) পাটকেলঘাটা থানার মামলা-১৯, (২৭ মে’২০২৩) এছাড়া ২০১৩ সালের একাধিক নাশকতা মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি নাশকতা মামলায় হাসান জেলা হাজত থেকে জামিনে বের হয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এলাকায় তার নেতৃত্বে সংগঠিত হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এলাকাবাসীর অভিযোগ শিবির ক্যাডার হাসানের নেতৃত্বে ২৮ অক্টোবর ঢাকার জামায়াতের মহাসমাবেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে যোগদান করেন।
এদিকে কমান্ড স্টাইলে গাছ কেটে জমি দখলের ঘটনায় সোমবার পাটকেলঘাটা থানায় বাদী হয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জারিকারক মোঃ আলমঙ্গীরের পিতা লিয়াকা গাজী হাসানসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এফয়ারের জন অভিযোগ দাখিল করেছেন। তাদের অভিযোগ পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছে। কিন্তু সন্ধ্যায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।
জমি দখলের ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদ হাসান জানান, রাতে দুই বার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তাদের একজনকে ধরে নিয়ে কোটে চালান দেওয়া হয়েছে। এই জমি নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ ছিল।