সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত জাজেস কমিটি গত ৩১ অক্টোবর একটি সভার আয়োজন করে। ওই সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ৮ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টসহ প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিদের বাসভবন এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে চিঠিতে অন্য যেসব নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এমনিতেই প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিদের বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে কাকরাইল ও মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত, মগবাজার মোড় থেকে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত, কাকরাইল মোড় থেকে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত এলাকাকে বিশেষ নিরাপত্তা এলাকা গণ্য করে—এ এলাকার ভেতরে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল আয়োজন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে ডিএমপিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনও বিশেষ রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন ও বিচারপতি কমপ্লেক্স এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ছুটির দিন ব্যতীত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাইক ব্যবহার করে কোনও সভা-সমাবেশ করা যাবে না।’
ডিএমপি কমিশনারকে লেখা এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়—‘‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বিচারপতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘বিজয়-৭১’ ভবনে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি, পুলিশ চেকপোস্টের নিরাপত্তাজনিত কার্যাবলির জন্য একটি টেবিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বিচারপতিদের যাতায়াতের পথে পুলিশের টহল ও তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে।’’
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটগুলো এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন ও বিচারপতি কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকাকে সিকিউরিটি জোন হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের বাসভবন এলাকায় পর্যাপ্ত ও শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলসহ দায়িত্ব পালনকারী নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও বিচারপতি কমপ্লেক্সে গাড়ি গমনাগমনের তথ্যাবলি নির্দিষ্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।’
চিঠিতে আরও উল্লেখ আছে—‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উভয় বিভাগের বিচারপতিদের গানম্যানদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ বা ব্রিফিং প্রদান করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপ-পুলিশ কমিশনারকে (প্রটেকশন অ্যান্ড প্রটোকল) নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা প্রহরীরা কর্তব্যরত অবস্থায় সার্বক্ষণিক নির্ধারিত পোশাক ব্যবহার করবে বলে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়