দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর।
সংসদ সদস্য হতে আগ্রহীরা ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেছেন। তবে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে হলে বাংলাদেশের নাগরিকদের থাকতে হবে কিছু যোগ্যতা।
বাংলাদেশের সংবিধানে সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে-
কোনো ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে।
আদালত কর্তৃক ওই ব্যক্তিকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করা হয়নি।
কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার বা ঘোষণা করলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধের দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ডের পর মুক্তি পাওয়ার পাঁচ বছর পার না হলে তিনি প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।
কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী হলে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না।
সংবিধান ছাড়াও ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ ধারাতেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারবেন না যদি-
তিনি কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত না থাকেন।
তিনি কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন না পান বা স্বতন্ত্র প্রার্থী না হন।
সরকারি কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
যেকোনো কারণে কোনো ব্যক্তির ওপর কোনো আসনে তার নির্বাচন অবৈধ বলে ঘোষিত হয় এবং এই ঘোষণার পর পাঁচ বছর পার না হয়।
তিনি দুর্নীতির কারণে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত না হন এবং এই ঘটনার পর যদি পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়।
সরকারি কর্তৃপক্ষ বা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের কোনো চাকরি থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ করলে ওই পদত্যাগ বা অবসরের পর তিন বছর পার না হলে তিনি সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। সরকার বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ সহজ করে বলতে গেলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না যদি না তার অবসরের পর তিন বছর পার না হয়।
কোনো ব্যক্তি সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িত থাকলে তিনি সংসদ সদস্য পদে লড়তে পারবেন না। পণ্য সরবরাহ, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আইনি পরামর্শমূলক সেবাও ব্যবসায়িক সম্পর্কের আওতায় পড়ে।
বিদেশি কোনো রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এমন কোনো বেসরকারি সংস্থার কার্যনির্বাহী পদে কর্মরত থাকলে বা এই পদ থেকে পদত্যাগ বা অবসরের পর তিন বছর পার না হলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
এমন কোনো কোম্পানি বা ফার্মের অংশীদার হলে যারা কোন ব্যাংক থেকে ঋণ পরিশোধ বা কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা সরকারের সেবাদানকারী কোন সংস্থানের কোনো বিল মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে সাত দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলেও তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
প্রার্থী হিসেবে কেউ যোগ্য হলে পরবর্তী ধাপ হিসেবে তাকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।