আওয়ামী লীগ ছাড়া জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী অন্য দলগুলো হচ্ছে–জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), গণতন্ত্রী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, তৃণমূল বিএনপি। জাতীয় পার্টির (জাপা) একটি পক্ষ থেকেও ইসিতে এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়েছে। জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের চিঠিতে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর চিঠিতে দলগতভাবে নির্বাচনে যাওয়ার কথা উল্লেখ আছে।
নির্বাচনকালীন সরকারপদ্ধতি নিয়ে প্রধান দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই ইসি ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি বেশির ভাগ বিরোধী দল। তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে হরতালও ডেকেছে তারা।
নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নেবে কি না সেই তথ্য জানতে চেয়ে ১৬ নভেম্বর নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে চিঠি পাঠায় ইসি। তফসিল ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে এই তথ্য ইসিকে জানানোর নিয়ম। গতকাল বিকেল ৪টায় সেই সময় শেষ হয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত ঠিক কয়টি দল চিঠি দিয়েছে সেই সংখ্যা জানাতে পারেনি ইসি। আজ রোববার সংখ্যাটি জানা যাবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বাইরে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম এল), গণতন্ত্রী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি ও তরিকত ফেডারেশন। এ ছাড়া তৃণমূল বিএনপি ইসিকে জানিয়েছে, ‘প্রগতিশীল ইসলামী জোট’ নামের একটি নতুন জোট নির্বাচনে অংশ নেবে। দলটির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকারের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, তৃণমূল বিএনপির প্রতীক সোনালি আঁশে এই জোটের প্রার্থীরা অংশ নেবেন।
কিছু জানায়নি যেসব দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ছাড়া আরও ৩৩টি দল জোটের বিষয়ে ইসিকে কিছু জানায়নি। অন্য দলগুলোর মধ্যে আছে—লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ কংগ্রেস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)।
১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই আগামী ১-৪ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ নভেম্বর। আর ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।
এদিকে কমনওয়েলথের প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসবে ইসি। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিনিধিদলের চার সদস্য উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সূত্র: আজকের পত্রিকা