প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩, ১০:০১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজ ১৫ নভেম্বর। ১৬ বছর আগে ২০০৭ সালের এই দিনে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হেনেছিলো সুপার সাইক্লোন সিডর। কেড়ে নিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ ও পশু-পাখির প্রাণ। নষ্ট হয়েছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলের জমি, ক্ষতি হয়েছে গাছপালার। বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। মৃত্যু ভাসিয়ে নিয়েছে আপনজনদের। সিডরের ১৬ বছর পরও সেই ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি উপকূলবাসী। স্বাভাবিক হয়নি বরগুনার তালতলীসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
প্রলয়ঙ্কারী সিডরের পরবর্তী প্রভাবে দিন দিন কমে যাচ্ছে কাজের সুযোগ। খাবারের উৎস হারিয়ে যাচ্ছে। দেখা দিচ্ছে সুপেয় পানির সংকট। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমশই এসব সংকট বেড়েই চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিডরের তাণ্ডবে বরগুনার(বুড়িশ্বর) পায়রা নদীতে দেওয়া বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে গিয়েছিল। এখনও সেসব বেড়িবাঁধের অনেকগুলো ভাঙা ঝুঁকিতে থাকার ফলে দারিদ্র্যের পাশাপাশি এসব এলাকায় পরিলক্ষিত হচ্ছে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, যৌতুক প্রবণতা। মারাত্মকভাবে বাড়ছে শিশুশ্রম।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী সিডরে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৬ জন, নিখোঁজ ১ হাজার ৩ জন ও মারাত্মক আহত ৫৫ হাজার।
এরমধ্যে শুধু বরগুনার তালতলীতে সিডরে নিহত হয়েছেন ১৫০ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ১১৪ ও আহত হয়েছিল ২ হাজার ৫শ জন। তাই ১৫ নভেম্বর দিনটিকে “অভিশপ্ত দিন” হিসেবে মনে করেন এলাকাবাসী।
এ বিষয় লেখক গবেষক খায়রুল ইসলাম বলেন, বরগুনাসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনপদে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উন্নয়নে ব্যাপক কাজ হলেও তার অধিকাংশ চলে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার পকেটে। তাই সিডর বিধ্বস্ত এই জনপদের মানুষের মধ্যে ত্রাণ কিংবা ঋণ বিতরণ করা হলেও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সিডরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এতো সহজ নয়। তবে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ উপকূলের জনগণকে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবে বলে আশা তার।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, সিডর বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এর ক্ষতি অপূরণীয়। তবু সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করলে উপকূলবাসী কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।